বেতন-ভাতা ছাড়া উপদেষ্টা হিসেবে ১০১ দিন কাজের সুযোগ চান সিরাজ-উদ-দৌলা
Published: 3rd, March 2025 GMT
উত্তরাঞ্চলের মো. সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বেতন-ভাতা ছাড়া ১০১ দিন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ চেয়েছেন। সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সকল অঞ্চলের সঠিক প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এবং এই অঞ্চলের জনগণের স্বার্থ ও সমস্যাগুলো নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে উত্তরাঞ্চলের কোনো প্রতিনিধি উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হননি। এটি এই অঞ্চলের জনগণের জন্য হতাশাজনক এবং তাদের উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণে যথাযথ কণ্ঠস্বরের অভাব সৃষ্টি করেছে।’
সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, অবিলম্বে উত্তরাঞ্চলের একজন উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তিকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করুন। এতে শুধু উত্তরাঞ্চলের জনগণই উপকৃত হবে না, বরং এটি সুষম উন্নয়ন এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতদিনেও বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নির্বাচিত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে, আমি মোহাম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী নিজেকে একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে যোগ্যতা সম্পন্ন মনে করি। তাই আমি বেতন-ভাতা ছাড়াই ১০১ দিনের জন্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ চাই। আমি বিশ্বাস করি, সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে আমি অন্যান্য উপদেষ্টাদের তুলনায় আরও ভালো কাজ করতে পারব। ইনশাল্লাহ।’
আশা প্রকাশ করে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি কোনো দলের সাধারণ সদস্যপদ নেইনি। কিন্তু সিনিয়র রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যে থেকে রাজনীতিতে স্বশিক্ষিত হয়েছি। এই আত্মবিশ্বাস থেকে আমি বলতে পারি আমাকে উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিলে উত্তরাঞ্চলকে সারাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারব। আমি আশা করি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমার এই যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন।’
মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ ঠিক করার কথা জানিয়ে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে মাত্র দুই সপ্তাহে দেশের ‘ল’ অ্যান্ড অর্ডার ইনশাল্লাহ পুরোপুরি ঠিক করে দেব। উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না দিয়ে দিল্লি যে অবিচার আমাদের প্রতি করছে, সেরকমই উত্তরবঙ্গের প্রতি উপদেষ্টা না দিয়ে চরম অবিচার করছে ঢাকা।’
তিনি বলেন, ‘আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে গাভির কাছ থেকে যেভাবে গোয়াল দুধ দোহন করে সেভাবে ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করব ইনশাআল্লাহ।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব