নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে: আমির খসরু
Published: 4th, March 2025 GMT
‘নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে’। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। একেকটা দিন যাচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যতিত, একেকটা সমস্যা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো গণতান্ত্রিক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহি দায়বদ্ধ সরকার গঠন করা। যাদের পলিটিক্যাল ওয়েট থাকবে, যাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি থাকবে, যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে তারাই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
সোমবার জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু চৌধুরী বলেন, পুলিশ, র্যাব, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান করতে পারবে না। একটি জনগণ সমর্থিত সরকার যখন দেশ পরিচালনা করে সেই সমর্থনকে নিয়েই কিন্তু দেশ পরিচালিত হয়, সেই সমর্থনকে নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে, দেশের সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করে। সেটা আজকে অনুপস্থিত, সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে আমাদের তুলে ধরতে হবে।
নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব কিনা জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, নির্বাচন জুন মাসের মধ্যেও সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করছে না। নির্বাচনের বিষয়টা তো সরকারকে বলতে হবে। সরকারের পলিটিক্যাল উইল থাকতে হবে, ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেটার অপেক্ষায় জনগণ আছে। আর বাংলাদেশের জনগণ ছাড়াও যারা স্টেক হোল্ডার আছে দেশের ভেতরে দেশের বাইরে। তারা সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করছে কারণ তাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, নির্বাচিত সরকারের অধীনে হলে তারা শর্ট টার্ম-মিড টার্ম-লং টার্ম যে সব প্ল্যান-প্রোগ্রাম তাদের আছে তা তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে। এ জন্য তারাও অপেক্ষা করছে।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ আজম খান, কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুস সালেকীন, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
দেশের কিছু রাজনৈতিক দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “দেশের কিছু রাজনৈতিক দল এটাকে (পিআর) প্রমোট করে। তারা শপথ করে বসে আছে, পিআর ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না, কী বলব?”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
আরো পড়ুন:
মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: ফখরুল
পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি: ফখরুল
স্মরণ সভার আয়োজন করে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।
মির্জা ফখরুল বলেন, “সমস্যা হলো আমাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) নতুন নতুন চিন্তা আসছে, যেগুলো আমাদের দেশে পরিচিত নয়। সংসদে আনুপাতিক হারে নির্বাচন, এটা দেশের মানুষ বোঝেই না। পিআর কী জিনিস? জনগণ এখনো ইভিএমে ভোট দিতে পারে না, বোঝে না। সুতরাং পিআর চিন্তাভাবনা থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা না করলে সমস্যার সমাধান হবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “বাইরে থেকে এসে বসে বা কাউকে নতুন নতুন চিন্তা দিয়ে কিন্তু দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। অবিলম্বে জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল (সোমবার) বলেছিলাম, ‘বেদনায় নীল হয়ে যাচ্ছি।’ এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমরা রাজনীতি করতে এসেছিলাম একটা পরিবর্তনের জন্য। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ১৭০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেল, হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রাণ দিল। জুলাই মাসে প্রায় দুই হাজার প্রাণ দিল তার মূল্যটা কী? দাম কী?”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১২টি বিষয়ে সব দল ঐকমত্য পোষণ করা বিষয়টিকে পজিটিভ হিসেবে দেখেছেন বিএনপি মহাসচিব। এজন্য তিনি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
দেশে সংস্কার বিএনপির হাত ধরে শুরু মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না, এটাকে সাদরে গ্রহণ করি।”
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসে জাতীয় নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করেছেন, সে সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।”
স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ