সিদ্ধিরগঞ্জে ছাত্র হত্যা মামলায় বাবা-ছেলে পলাতক
Published: 5th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রতিহত করতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে ছাত্র জনতার ওপর হামলাকারী এবং একাধিক হত্যা মামলার আসামি শামীম ওসমানের সহযোগী নাসিকের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মন্ডল ও তার বড় ছেলে যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম মন্ডল অপারেশন ডেভিল হান্টের ভয়ে গাঁ ডাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এতদিন তারা জামিনে এলাকায় প্রকাশ্যে ছিলো। জামিন শেষ হলে আত্নসমর্পণ না করে গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাবা ও ছেলে। এদিকে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলা ও গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় প্রায় ১৭টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও সিরাজ মন্ডলের বড় ছেলে জাহিদ মন্ডলের বিরুদ্ধে সোঁনারগাও, সিদ্ধিরগঞ্জ সহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা যায়, দেড় দশক আগে একজন রাখাল ছিলেন সিরাজ মন্ডল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রথমে সাবেক মেয়র ডা.
তেল ডিপো নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীক চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে নানান অপকর্মের মাধ্যমে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে এসওরোডের ৬নং ওয়ার্ড এলাকায় স্বঘোষিত সম্রাট বনে যান তিনি। তেল চুরিতে বাঁধা দেয়ায় নৃশংস ভাবে পুলিশ কনস্টেবল মফিজ হত্যা মামলায় চার্জশিট ভুক্ত আসামি সিরাজুল ইসলাম মন্ডল।আওয়ামী লীগ আমলে তিনি বনে গেছেন শত কোটি টাকার মালিক।
সারাদেশে তার ১২ টি তেল পাম্প, জাহাজসহ অসংখ্য ব্যবসা রয়েছে। গত ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করায় তার সাম্রাজ্য ছিল বহাল তবিয়তে। বর্তমানে যুবদলের এক নেতা তার ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক মামলায় আসামি হয়ে এলাকা ছাড়েন সিরাজ মন্ডল। পরে গত জানুয়ারিতে জামিনে এসে এলাকায় প্রকাশ্যেই ছিলেন সিরাজ মন্ডল।
জামিনে এসে তিনি তার বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে। মূলত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলার ভয়ে সম্পত্তি বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজ মন্ডলের ঘনিষ্ঠজনরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টের কঠোর অভিযান চলমান রয়েছে। সিরাজ মন্ডলসহ সকল আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে। আইনের হাত থেকে কেউ ছাড় পাবে না।
এর আগে, গত ১৩ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি ও তার ছেলে মশিউর রহমান বাবুইকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ছ ন বল
এছাড়াও পড়ুন:
যাদের টাকা নিয়েছেন, তাদের ফেরত দেন : মাকসুদ চেয়ারম্যানকে সাখাওয়াত
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, গত ১৫টি বছর বন্দরের মানুষ ভালো ছিল না কারণ এখানে অপশাসন চলেছিল।
এই বন্দরে চলত ওই সেলিম ওসমানের শাসন তিনি এই বন্দরকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেছিলেন। আর তার কিছু সর্দার মানে লাঠিয়াল ছিল তাদেরকে ব্যবহার করে তিনি জনগণের সম্পদ লুট করেছিলেন।
আর বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা সেলিম ওসমানের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। মুসাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন কিন্তু সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের অন্যতম দোসর ছিলেন। মুসাপুরে এমন কোন অপকর্ম নাই যা তিনি করেন নাই।
জুলাই বিপ্লবের আন্দোলন যারা করেছে তারা কিন্তু কোন কিছুই করে নাই। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি ৫ই আগস্টের পরই ওই স্বৈরাচারের দোসর মাকসুদ হোসেন ও তার ছেলের নেতৃত্বে জনগণের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ২৫ থেকে ৩০টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে এবং লুটপাট করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
আর যাদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্তর্গত বন্দর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম কার্যক্রম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল চারটায় মুছাপুর ইউনিয়নের হরিবাড়ি এলাকায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, মাকসুদ চেয়ারম্যান এখন আবার নির্বাচন করতে চায় এমপি হওয়ার সাধ জাগছে। শেখ হাসিনা ও সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের দোসর তাকে বাংলার মাটি তথা বন্দরের মাটিতে কোন স্থান নাই। তাদের স্থান হবে ওই জেলখানায়।
স্বৈরাচারের দোসরা যারা চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছে তাদেরকে আর ছাড় নাই তাদের স্থান হবে ওই জেলখানায়। মাকসুদের বিরুদ্ধে কিন্তু অনেক বৈষম্য বিরোধী মামলা রয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম শান্ত থাকেন।
আপনার যে সাধ জেগেছে সেটা এই বন্দরের মানুষ আপনাকে করতে দিবে না। শুধু তাই না আমরা জানতে পেরেছি এই মাকসুদ এই বন্দর মানুষকে গ্যাসের কথা বলে বেড়িয়েছে এবং অনেক কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছেন।
অনেকেই আমাদের কাছে এই বিষয়ে বলেছে আমরা বলতে চাই যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাদের টাকা ফেরত দেন। অন্যথায় আমরা আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকব।
ইনশাল্লাহ আমাদের সরকার বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আমরা এই বন্দরের বঞ্চিত জনগণকে গ্যাসের ব্যবস্থা করে দিবো। আর এই গ্যাসের জন্য কোন জনপ্রতিনিধিকে আপনারা কোন টাকা পয়সা দিতে হবে না।
মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়ার সভাপতিত্বে এবংনারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন, সদস্য হুমায়ূন কবির।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুদুর, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ রহিম, বিএনপি নেতা অনিক আহম্মেদ, মোশারফ হোসেন, খোরশেদ আলম, মাকসুদ হোসেন, নুর আলম, বিল্লাল হোসেন, পানা উল্লাহ, নিজাম হোসেন, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধানস, বন্দর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আল আমিনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবন্দ।