পিরোজপুরে রড চুরির অভিযোগের পর বিএনপির তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার
Published: 6th, March 2025 GMT
পিরোজপুরের নাজিরপুরে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী অহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই তিনজনের বিরুদ্ধে সেতুর ছাউনি ভেঙে রড চুরির অভিযোগ ওঠার পর দল থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ওই তিন নেতা হলেন নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলার মাটিভাঙা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সরদার সাফায়েত হোসেন (শাহীন), ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক হেদায়েত খান (৫০) ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (৪৫)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই তিনজনের দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় পদ–পদবি থেকে বহিষ্কার করা হলো। এ ছাড়া নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে কোনো ধরনের দলীয় সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার গভীর রাতে নাজিরপুরের মাটিভাঙা ইউনিয়নের উত্তর বানিয়ারী গ্রামে একটি লোহার সেতুর ছাউনির ঢালাই ভেঙে লোহার রড চুরির ঘটনা ঘটে। এতে বহিষ্কৃত তিন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। রড চুরির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন মাটিভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম।
রড চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে সরদার সাফায়েত হোসেন বলেন, তিনি এলাকার বাইরে আছেন। তিনি বিএনপির গ্রুপিংয়ের শিকার।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রড চ র র ব এনপ র ওই ত ন সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ