ভারতের মুম্বাইয়ের এক সরকারি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন পুলিশি হেফাজতে থাকা এক বাংলাদেশি নারী। তিনি গর্ভবতী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে ২১ বছর বয়সি ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাইয়ের ভাসি পুলিশ। পরবর্তীতে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে মুম্বাইয়ের স্যার জে জে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ওই হাসপাতালে ১০ নম্বর কেবিনে ছিলেন ওই নারী। ১৪ আগস্ট হঠাৎ করেই নিরাপত্তা রক্ষীদের নজর এড়িয়ে সেখান থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। 

পুলিশের মতে, রুবিনা ইরশাদ শেখ নামের ওই নারী নভি-মুম্বাইয়ের সেক্টর-৫ এ থাকতেন। ১৩ জানুয়ারি  রুবিনা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কই সাথে তার মা আয়েশা ইরশাদ শেখ, বড় ভাই হুসেন শেখ, বোন রেশমা ইরশাদ শেখ এবং  ১৭ বছর বয়সী ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, রুবিনার মা আয়েশা ইরশাদ শেখ বাংলাদেশের যশোর জেলার ভাটপাড়া থানার অন্তর্গত মহেশ খুলা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা স্বীকার করেছিলেন, ২৫-৩০ বছর আগে তিনি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রকাশ করেছিলেন। 

গ্রেপ্তারের সময় রুবিনাসহ বাকিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ভারতীয় পাসপোর্ট ও অন্যান্য ভারতীয় পরিচয় পত্র। পুলিশের ধারণা ভুয়া ভারতীয় নথি জোগাড় করে ওই পাসপোর্ট তৈরি করেছেন এরা। 

ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে রুবিনার বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্ট, পাসপোর্ট আইন এবং 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' (বিএনএস) -এর একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে রুবিনাকে আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় হেফাজত হয় রুবিনার। পরে তাকে বাইকুল্লা জেলা নারী কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে অবস্থানকালে অসুস্থতা বোধ করতে শুরু করে সে। জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হয় রুবিনা, দেখা দেয় ত্বকের সমস্যাও। ১১ আগস্ট পুলিশ তাকে জে জে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা যায় রুবিনা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনদিন পর গত বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতাল থেকেই পালিয়ে যান রুবিনা। 

পুলিশ জানিয়েছে, কারাগারের বন্দি হাওয়ায় হাসপাতালে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশের সদস্যরাও। ওই দিন আলট্রাসনোগ্রাফি করার জন্য এক নারী কনস্টেবল তাকে পাহারা দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে ওই নারী কনস্টেবলের নজর এড়িয়ে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে গা ঢাকা দেন রুবিনা। পুলিশের হাত থেকে বিচারাধীন বন্দির পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে স্যার জে জে মার্গ পুলিশ থানায় একটি অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, রুবিনাকে খুঁজে বের করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইরশ দ শ খ ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা সব সময় চ্যালেঞ্জের। গত এক বছরে এই চ্যালেঞ্জটা আরও বড় করে দেখা দিয়েছে। আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, পারস্পরিক স্বার্থ আর শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা ‘গুড ওয়ার্কিং রিলেশন’ (কাজের ক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক) চাই। আর এই সম্পর্কটা হবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জনগণের প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু বলেনি যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে হবে। মানুষ চায় দুই দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক স্বার্থ আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে। দেশের জনগণের একটা বড় অংশের ধারণা, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সরকার সেটা করেনি। দেশের স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়নি। কাজেই দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ভালো সম্পর্কে যে গুরুত্ব দিয়েছি, এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।

চীন নিজেও জানে এবং আমরাও তাদের বোঝাতে পেরেছি, ’৭৫ সালে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক সব সময় বজায় থেকেছে। এমনকি বাংলাদেশের ক্ষমতায় বিপরীতমুখী দল থাকলেও সম্পর্ক এগিয়ে গেছে। এই ধারাবাহিকতায় গত এক বছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে।

আরও পড়ুনদ্বিধা আর সমন্বয়হীনতায় সরকারের কূটনীতি৩ মিনিট আগে

পাল্টা শুল্ক নিয়ে সাময়িকভাবে অস্বস্তি তৈরি হলেও গত এক বছরে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো। যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তাদের জন্য হুমকি বা ক্ষতিকর কিছু নয়। এটা মূলত অর্থনৈতিক সম্পর্ক। আমাদের নিজেদের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা ‘আউট অব দ্য ওয়ে’ (নিয়মের বাইরে গিয়ে) কিছু করছি না। অন্য অনেক দেশের মতোই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। যেখানে ব্যবসা, বিনিয়োগের পাশাপাশি মানুষের চলাচল সুগম করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বৈরী সম্পর্কের প্রয়োজন নেই। অতীতে অকারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করার সময় অমীমাংসিত তিন বিষয় আলোচনার টেবিলে থাকছে।

রোহিঙ্গা সংকটে জটিলতা বেড়েছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর রাখাইনে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে সেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তখন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যেতে পারে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের ঢাকা মিশনটি চালুর ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইয়ের পর সম্মতি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ যেভাবে প্রস্তাব দিয়েছিল, সে অনুযায়ী মিশনটি চালু হয়েছে এমনটি নয়। মানবাধিকার সুরক্ষায় আমাদের সমস্যা ছিল এবং এখনো আছে। এখানে জাতিসংঘের মিশন চালুর ফলে মানবাধিকার ইস্যুতে সরাসরি দুই পক্ষের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিদেশে কনস্যুলারকেন্দ্রিক বাংলাদেশের মিশনে জনগণের সেবা সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার জহুরবারুতে কনস্যুলেট চালু হচ্ছে। সৌদি আরবে আরেকটি কনস্যুলেট চালু করা হবে। ওমানে লোকজনের দুর্ভোগ কমাতে ওমান পোস্টের মাধ্যমে পাসপোর্ট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তবে মূল চ্যালেঞ্জটা অর্থনীতির ক্ষেত্রে। বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা পছন্দ করেন না। আমাদের এই সরকার দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্বে থাকবে না। এরপরও বিনিয়োগকারীদের বোঝাতে হয়েছে যে তাঁরা কোনো বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এলে পরবর্তী সরকার এসে আটকে দেবে না। এরপরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আশাব্যঞ্জক নয়। ফলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা রয়ে গেছে।

মো. তৌহিদ হোসেন, উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ছেলেকে নিয়ে স্বামীর দুধ দিয়ে গোসল
  • ২০০৮ সালের নির্বাচনও ছিল সাজানো, কারা নির্বাচিত হবেন ঠিক করা ছিল: মঈন খান
  • জয়পুরহাটে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
  • ৪৪তম বিসিএস : ফল নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা, অনিশ্চয়তায় ১,৩১৮ প্রার্থী
  • ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: ফলপ্রসূ দাবি, অর্জন নিয়ে প্রশ্ন
  • আলাস্কা শীর্ষ বৈঠক ট্রাম্প-পুতিন ও ইউক্রেনের জন্য কী বার্তা আনল
  • সোনারগাঁয়ের আলোচিত চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল গ্রেপ্তার
  • ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের