ভারতে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে কারাবন্দি বাংলাদেশি নারী
Published: 16th, August 2025 GMT
ভারতের মুম্বাইয়ের এক সরকারি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন পুলিশি হেফাজতে থাকা এক বাংলাদেশি নারী। তিনি গর্ভবতী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে ২১ বছর বয়সি ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাইয়ের ভাসি পুলিশ। পরবর্তীতে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে মুম্বাইয়ের স্যার জে জে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ওই হাসপাতালে ১০ নম্বর কেবিনে ছিলেন ওই নারী। ১৪ আগস্ট হঠাৎ করেই নিরাপত্তা রক্ষীদের নজর এড়িয়ে সেখান থেকে উধাও হয়ে যান তিনি।
পুলিশের মতে, রুবিনা ইরশাদ শেখ নামের ওই নারী নভি-মুম্বাইয়ের সেক্টর-৫ এ থাকতেন। ১৩ জানুয়ারি রুবিনা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কই সাথে তার মা আয়েশা ইরশাদ শেখ, বড় ভাই হুসেন শেখ, বোন রেশমা ইরশাদ শেখ এবং ১৭ বছর বয়সী ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রুবিনার মা আয়েশা ইরশাদ শেখ বাংলাদেশের যশোর জেলার ভাটপাড়া থানার অন্তর্গত মহেশ খুলা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা স্বীকার করেছিলেন, ২৫-৩০ বছর আগে তিনি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রকাশ করেছিলেন।
গ্রেপ্তারের সময় রুবিনাসহ বাকিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ভারতীয় পাসপোর্ট ও অন্যান্য ভারতীয় পরিচয় পত্র। পুলিশের ধারণা ভুয়া ভারতীয় নথি জোগাড় করে ওই পাসপোর্ট তৈরি করেছেন এরা।
ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে রুবিনার বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্ট, পাসপোর্ট আইন এবং 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' (বিএনএস) -এর একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে রুবিনাকে আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় হেফাজত হয় রুবিনার। পরে তাকে বাইকুল্লা জেলা নারী কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে অবস্থানকালে অসুস্থতা বোধ করতে শুরু করে সে। জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হয় রুবিনা, দেখা দেয় ত্বকের সমস্যাও। ১১ আগস্ট পুলিশ তাকে জে জে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা যায় রুবিনা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনদিন পর গত বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতাল থেকেই পালিয়ে যান রুবিনা।
পুলিশ জানিয়েছে, কারাগারের বন্দি হাওয়ায় হাসপাতালে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশের সদস্যরাও। ওই দিন আলট্রাসনোগ্রাফি করার জন্য এক নারী কনস্টেবল তাকে পাহারা দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে ওই নারী কনস্টেবলের নজর এড়িয়ে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে গা ঢাকা দেন রুবিনা। পুলিশের হাত থেকে বিচারাধীন বন্দির পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে স্যার জে জে মার্গ পুলিশ থানায় একটি অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রুবিনাকে খুঁজে বের করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইরশ দ শ খ ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিককে মামলায় জড়ালো পুলিশ
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকায় জমি বিরোধের জেরে দুইপক্ষের দ্বন্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি হয়েছেন মোল্লা ফারুক হাসান নামে এক সাংবাদিক।
তবে থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত না করেই মামলাটি এজাহারভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ
‘সিভিক ডিফেন্ডারস অব বাংলাদেশ’ ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন
ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকা এবং সময়ের কন্ঠস্বর অনলাইন নিউজ পোর্টালের স্থানীয় প্রতিনিধি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান অভিযোগ করে বলেন, “গত কয়েকদিন আগে কটকস্থল বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন আরিফ ফিলিং স্টেশনের সামনে স্থানীয় হারুন-অর রশিদ বেপারী ও মো. হিরা মাঝি গংদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানা পুলিশ। এরপর সেখানে আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। পরবর্তীতে পুরো ঘটনা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।”
তিনি বলেন, “ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হারুন-অর রশিদ বেপারী তার প্রতিপক্ষ মো. হিরা মাঝিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই অভিযোগের মধ্যে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে থানা পুলিশ ওই অভিযোগের কোনো তদন্ত না করেই আমাকে আসামি করে ফিলিং স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে এজাহারভূক্ত করেন।”
তিনি আরো বলেন, “যেখানে সাধারণত হুমকি-ধামকির বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে আগে তদন্ত প্রসঙ্গটি উত্থাপণ করে থানা পুলিশ। সেখানে ঘটনার সময় থানা পুলিশ ওই ফিলিং স্টেশনে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মনগড়াভাবে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত ছাড়া তড়িঘড়ি করে আমাকে জড়িয়ে মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রহস্যজনক।” মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে তিনি (সাংবাদিক) সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি হারুন-অর রশিদ বেপারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “একটা মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, “পেট্রোল পাম্প নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ সংবাদকর্মীদের দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এবং গৌরনদী থানার ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া সংবাদ প্রকাশিত করিয়েছে। একটি পক্ষ ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটির এজাহার দায়ের করা হয়।”
তিনি বলেন, “তদন্ত করার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসার কারণে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে এক সাংবাদিক রয়েছে বলে জানা গেছে। সাংবাদিক মোল্লা ফারুক যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাহলে তার কিছুই হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “ওই সাংবাদিক (মোল্লা ফারুক) আমার কাছে এসেছিল। তাকে আমি বলেছি, আপনি যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে আপনাকে পুলিশ খোঁজবেও না, আপনি নিশ্চিত থাকেন।”
অপরদিকে, তদন্ত ছাড়া গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসানকে মামলায় আসামি করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর ও বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নিকুঞ্জ বালা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। তারা অনতিবিলম্বে ওই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি ও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
এছাড়াও পৃথক বিবৃতিতে একই দাবি করেছেন বাংলাদেশ গ্রামীণ সাংবাদিক সংগঠন, গৌরনদী প্রেসক্লাব, কালকিনি সাংবাদিক ফোরাম, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দরা।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী