ইফতারের শুরুই হয় শরবত, ডাবের পানি, ফলের রস—এ রকম পানীয় দিয়ে। তবে কেউ কেউ কোমল পানীয়ও গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু ইফতারে কোনটি ভালো? আসুন, জেনে নেওয়া যাক:
ঘরে তৈরি যেকোনো ফলের শরবত বেশ স্বাস্থ্যবান্ধব। এর মধ্যে বেশি জনপ্রিয় আর উপকারী বেল, আনারস, পেয়ারা ও তেঁতুলের শরবত। ডাবের পানিও অনেকের প্রিয়। ফল শর্করা, সামান্য প্রোটিন, ফ্যাটসহ সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর। থাকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ফাইবার ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। আরও থাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি।
গরমে সারা দিন রোজা রেখে শরীর সতেজ রাখা সত্যিই চ্যালেঞ্জের। তবে সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা সেই চ্যালেঞ্জ খুব সহজেই অতিক্রম করতে পারি। সেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার একটি প্রধান উপাদান হচ্ছে ফলের শরবত।
উপকারিতা● ইফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই শারীরিক দুর্বলতা বেশি অনুভূত হয়। এ ক্ষেত্রে ফলের লুকোনো সুগার খুব ধীরে ধীরে আপনার রক্তের গ্লুকোজ লেভেল বাড়িয়ে আপনাকে এনার্জেটিক করে তুলবে। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা কোনো চিনি বা গুঁড় মেশাবেন না। ইফতারে ফলের শরবত আপনার মস্তিষ্কের জ্বালানি হিসেবেও কাজ করবে।
● ক্লান্ত পেশিকে সতেজ করে ভিটামিন ও মিনারেলস। এ ক্ষেত্রে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পেঁপেতে ভিটামিন বি-এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।
● ফলের পটাশিয়াম স্নায়ুবিক দুর্বলতা দূর করে। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
● রোজা রাখায় শরীরে কিছুটা পানিশূন্যতা তৈরি হয়। তবে ফলের জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে শরীরের প্রতিটি কোষকে কর্মক্ষম রাখে। শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্যও রক্ষা করে।
● ফলের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট শরীরে ফ্রি-র্যাডিকেল তৈরি হতে বাধা দেয়, মৃত কোষ অপসারণ করে। ফলে কোষের ইমিউনিটি বাড়ে।
● অন্ত্রের গুড ব্যাকটেরিয়ার খাবার হচ্ছে ফাইবার। তাই ইফতারে ফলের রস খেলে অন্ত্রে গুড ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। এতে পরিপাকতন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়। প্রস্রাবের সংক্রমণ, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
● ফলের ব্রমোলিন (আনারসে থাকে) আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
● ফলের বিটা ক্যারোটিন চোখের রেটিনার সুরক্ষা দেয়।
● শরীরে ব্যাড ফ্যাট, এলডিএল, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমিয়ে রক্তের গুড ফ্যাট এইচডিএলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
● ফলের আয়রন, ভিটামিন সি, জিংক, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বক ও চুলের সুরক্ষা দেয়।
● প্রতিটা ফলে অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
সতর্কতা● ডায়াবেটিক রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকা সাপেক্ষে ফলের রস খাবেন।
● কিডনি রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন। ডাবের পানি বা বেশি পটাশিয়াম তাঁদের জন্য ক্ষতিকর।
● ফল জুস করে খাওয়ার চেয়ে চিবিয়ে খেলে পুষ্টিগুণ বেশি পাওয়া যায়।
● ইফতারের ৫-১০ মিনিট আগে জুস তৈরি করতে হবে। অনেক আগে তৈরি করে রাখলে জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে।
●উচ্চ রক্তচাপের রোগী তেঁতুলের শরবত কম খাবেন। কারণ, এতে লবণ দিতে হয় বেশি। আবার অ্যাসিডিটিতে তেঁতুলের শরবত এড়িয়ে চলাই উত্তম।
মো.
ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র শরবত ইফত র র র পর ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট