হাসিনা ও আওয়ামী লীগের অবরুদ্ধ ২৭ ব্যাংক হিসাবে কত কোটি টাকা
Published: 11th, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগের ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা থাকার তথ্য আদালতকে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার এসব ব্যাংক হিসাবসহ তাঁর পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মোট ১২৪টি ব্যাংক হিসাব আজ মঙ্গলবার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় আওয়ামী লীগের একটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৪ টাকা। এ ছাড়া বেসরকারি একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় আওয়ামী লীগের তিনটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। ওই তিনটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ২০ কোটি ৬৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭০ টাকা।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী তহবিল-২০০৮ নামে দুটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। একটি ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৯১৯ টাকা। আরেকটি ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা।
এর বাইরে আওয়ামী লীগের আরও চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। একটি বেসরকারি ব্যাংকের আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসেবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা। অন্য তিনটি ব্যাংক হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৪ লাখ ২৭ টাকা ২২৭ টাকা।
সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের ১০টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ১৫টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৬ টাকা।
শেখ হাসিনার ব্যাংক হিসাবে কত টাকাক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা থাকার তথ্য আদালতকে জানিয়েছে দুদক। শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ৩টি ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা হয়েছে, সেই তথ্য উল্লেখ নেই। একটি হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ মাত্র পাঁচ টাকা। আরেকটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১৫০ টাকা। একটি ব্যাংক হিসাবে সর্বোচ্চ জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ ব্যাংক হিসাবটি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার যৌথ হিসাব।
এ ছাড়া অবরুদ্ধ করা আরও একটি যৌথ ব্যাংক হিসাব রয়েছে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে।
এর বাইরে শেখ রেহানার নামে ছয়টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাতে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৭ টাকা।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দুটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ১৭ লাখ ১৫ হাজার ২৭১ টাকা জমা থাকার তথ্য পেয়েছে দুদক।
আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ২৯টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪৬৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৬ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১২৪টি ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য আদালতের কাছে তুলে ধরে দুদক। কোন ব্যাংকের, কোন শাখায়, কোন হিসাবে, কত টাকা জমা হয়েছে, সেসব বিবরণ আদালতের কাছে প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা থাকা এসব অর্থের স্থিতি কত তারিখের, তা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদের ‘সুধা সদন’ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিবের গাজীপুরের সম্পদ জব্দেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আরেক মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই তিনি পালিয়ে ভারতে যান। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মামলার তথ্য জানা গেছে। এর বাইরে দুদকও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ছয়টি মামলা করেছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ষমত চ য ত এসব ব য
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা শুল্ক কার্যকরে নতুন সময়সূচি ঘোষণা ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার সময়সূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৭ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হবে।
এর আগে ট্রাম্প ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলে দিয়েছিলেন, এ সময়ের মধ্যে চুক্তিতে না পৌঁছালে চড়া শুল্ক আরোপ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন নির্বাহী আদেশে ৭০টির বেশি দেশের ওপর নতুন পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে কার্যকর হবে।
যেসব পণ্য ৭ আগস্টের মধ্যে জাহাজে তোলা হবে বা বর্তমানে যাত্রাপথে রয়েছে এবং সেগুলো যদি ৫ অক্টোবরের আগে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে যায়, তবে সেগুলোর ক্ষেত্রে শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।
অবশ্য কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক ১ আগস্ট অর্থাৎ আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
আরও পড়ুনকোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগেউত্তর আমেরিকার এই দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের অন্যতম বড় বাণিজ্য সহযোগী হলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে অস্বস্তিকর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
কানাডা যেসব পণ্য রপ্তানি করে, তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। ধাতব পদার্থ ও কাঠের পাশাপাশি কানাডা বিপুল পরিমাণে তেল, গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, খাদ্যপণ্য এবং ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যারা বাণিজ্য চুক্তি করেনি, তাদের জন্য অনেক দেরি হয়ে গেছে: ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে আর কোনো চুক্তির সুযোগ নেই।