রিমান্ড শেষে কারাগারে সোলাইমান সেলিমসহ দুই জন
Published: 25th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক লালবাগ থানায় মাদরাসা ছাত্র শাহেনুর রহমান হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম এবং চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম রাডোকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন সোলাইমান সেলিমকে তিন দিন এবং সিরাজুল ইসলাম রাডোকে চার দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র সাব-ইন্সপেক্টর কবির হোসেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ তাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।
গত ১২ মার্চ সোলাইমান সেলিমের তিন দিন, সিরাজুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর গত বছরের ৬ আগস্ট ভোরে লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি চালালে মাদরাসাছাত্র শাহেনুর রহমান (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মো.
গত বছরের ১৪ নভেম্বর গভীর রাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি হত্যা, হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
বিভিন্ন থাকার ১১ মামলায় সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান তার আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম জ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল হলে বাকশাল ফিরে আসবে: আপিল শুনানিতে শিশির মনির
পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরো বাতিল হলে আবার বাকশাল ফিরে আসবে। সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বাদ পড়ে যাবে। যেভাবে আছে, সেভাবে থাকলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে দেখার সুযোগ বেশি থাকবে। আর এই ব্যাপ্তিটা খোলা থাকা উচিত, গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে যেন সংবিধান সংস্কার পরিষদ বিষয়গুলোতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।
পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অসাংবিধানিক ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের করা আপিল শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজ বুধবার এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এ শুনানি গ্রহণ করেন। আগামীকাল শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে।
পঞ্চদশ সংশোধনী পুরো বাতিল হলে জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে উল্লেখ করে শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিশির মনির বলেন, জুলাই চার্টার হয়েছে। এখানে বড় ধরনের প্রক্রিয়া ও বিষয়গত প্রস্তাব এসেছে। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ জারি হয়েছে। যেভাবে আছে, সেভাবে থাকলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে দেখার সুযোগ বেশি থাকবে। এখন যেভাবে আছে তাতে সিজার চালিয়ে দেওয়া হলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণের সামনে নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে।
শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে কে দেখবে? নবনির্বাচিত সংসদ দেখবে? তখন শিশির মনির বলেন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ। যার মূল হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে সংবিধান সংস্কার পরিষদের ওপরে দেওয়া হয়েছে। এ অংশ গণভোটে আবার চারটি প্রশ্ন আকারে যাচ্ছে। সংবিধান সংস্কার সভায় যদি ভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়, এমনও হতে পারে যে পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে আর আলোচনার প্রয়োজন না–ও হতে পারে। কারণ, জুলাই চার্টারে প্রস্তাবিত অনেকগুলো বিষয়ই পঞ্চদশ সংশোধনীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এই ব্যাপ্তিটা খোলা থাকা উচিত, গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে যেন সংবিধান সংস্কার পরিষদ এ বিষয়গুলোতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরো আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে গত বছর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ পাঁচ ব্যক্তি একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।
রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি–সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। রায়ে গণভোটের বিধানসংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ (দ্বাদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে আনা) পুনর্বহাল করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না করে অন্য বিধানগুলোর বিষয়ে আইন অনুসারে পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আপিল হয়। সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেন। নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন একটি এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরেকটি আপিল করেন। আপিলের ওপর ৩ ডিসেম্বর (গত বুধবার) শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর এবং আজ শুনানি হয়। আদালতে বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তির পক্ষে শুরুতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।
চার ব্যক্তির আইনজীবীর বক্তব্য উপস্থাপনের পর মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির শুনানিতে অংশ নেন। এরপর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন।