যুদ্ধবিরতির মধ্যে ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে নাগরিক সমাজ। দেশের ৩৯ জন নাগরিকের দেওয়া এ বিবৃতিতে গাজাবাসীর ওপর ইসরায়েলের কাপুরুষোচিত ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চালানো বর্বরতা বন্ধের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ যেসব দেশ ইসরায়েলকে এই অমানবিক, ন্যক্কারজনক আক্রমণে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা করছে, তাদের ধিক্কার জানানো হয়। পাশাপাশি জাতিসংঘসহ শান্তির পক্ষের সব পরাশক্তি দেশগুলোকে হামলা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ বর্বরতায় যুক্ত সব যুদ্ধাপরাধীর দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়।

টানা ১৮ মাস ধরে গাজা উপত্যকাসহ আশপাশের এলাকায় প্রাণঘাতী মারণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজারের বেশি শিশু, বাকিরা সাধারণ নারী ও ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র নাগরিক। এ ছাড়া কমপক্ষে আরও ১১ হাজার মানুষ হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবন ও স্থাপনার নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামাসের লোকজন সেখানে থাকতে পারেন, শুধু এই অজুহাতে হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, শরণার্থীশিবির, জাতিসংঘের সাহায্য প্রকল্পের দপ্তর—এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ইসরায়েল হামলা করেনি। এর ফলে পুরো ফিলিস্তিন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এ ধ্বংসযজ্ঞ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের নাৎসি বর্বরতা এবং জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলে চালানো অমানবিক নৃশংসতার কথা মনে করিয়ে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরায়েল তা মানছে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েল নির্বিচারে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার বেশির ভাগই শিশু।

আরও পড়ুনগাজার আরও ২৩ জনের মৃত্যু, নতুন করে বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ২৫ মার্চ ২০২৫

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, অধ্যাপক আনু মোহম্মদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নারী পক্ষের সদস্য শিরীন হক, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেইন, আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলম, বেলার প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) তাসলিমা ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নোভা আহমেদ, সিডিএর পরিচালক শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ, মানবাধিকারকর্মী নুর খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক খাইরুল চৌধুরী, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজীম, লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের ভিজিটিং প্রফেসর স্বপন আদনান, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের নায়লা জামান খান, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ, লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, কণ্ঠশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, নারী অধিকারকর্মী লায়লা পারভীন, সাংবাদিক ও গবেষক সায়দিয়া গুলরুখ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসনীম সিরাজ, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী সাঈদ আহমেদ, আদিবাসী অধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ ও মানবাধিকারকর্মী মুক্তাশ্রী চাকমা।

আরও পড়ুনইসরায়েলি নৃশংসতায় গাজায় নিহত ৫০ হাজার ছাড়াল, ১৭ হাজারই শিশু২৩ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র বর বর র ওপর আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড