অমতে বিয়ে, ছেলের পরিবারকে বেধড়ক পিটুনি চেয়ারম্যানের, এক নারীর গর্ভপাত
Published: 27th, March 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে অমতে মেয়ের বিয়ে ও পালিয়ে যাওয়া মানতে না পেরে ছেলের পরিবারকে ডেকে এনে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত সোমবার রাতে চিলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের ভাইয়ের তিস্তাপাড়ার বাড়িতে তাদের মারধর করা হয়। এতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর গর্ভপাত হয়েছে। আর এক বৃদ্ধার দুই হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হারুন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
মারধরে আহতরা হলেন– একই এলাকার আব্দুস সাত্তার, তাঁর স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৫০), ছোট ছেলে খোকন বাবু ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেহেনা খাতুন (২০)।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার আব্দুস সাত্তার আটজনের নামে দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে উল্লেখ করেন, তাঁর বড় ছেলে মোস্তাকিম ইসলামের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের মেয়ে সিফাতে সাদিয়া সুহার সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবারকে না জানিয়ে ২০২১ সালে মোস্তাকিম ও সুহা বিয়ে করে। বিষয়টি সম্প্রতি জানাজানি হয়। মেয়ের পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ২০ দিন আগে মোস্তাকিম ও সুহা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। পরে চেয়ারম্যান হারুন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় মেয়েকে খুঁজে বাড়ি নিয়ে যান। গত সোমবার সুহা ও মোস্তাকিম ফের বাড়ি ছাড়ে।
এতে আরও বলা হয়, ওই দিন রাত ৯টায় চেয়ারম্যান হারুনের লোকজন তাদের বাসায় গিয়ে মোস্তাকিমের অবস্থান জানতে চায়। তথ্য দিতে না পারলে তাঁকেসহ স্ত্রী ও ছোট ছেলের স্ত্রীকে জোর করে চেয়ারম্যানের ভাই নূর হোসেনের বাসায় নেওয়া হয়। আর ছোট ছেলে খোকনকে কর্মস্থল থেকে কৌশলে ডেকে নেওয়া হয়। পরে তাদের বেধড়ক মারধর করে চেয়ারম্যানের লোকজন। এতে তাঁর স্ত্রীর দুই হাত ভেঙে যায়। আর ছোট ছেলের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে আঘাত করায় তিনি গুরুতর আহত হন।
এর মধ্যে বিষয়টি জানতে পেরে খোকনের শ্বশুর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ কল করে দেবীগঞ্জ থানাকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। মঙ্গলবার ভোরে তাদের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার সেখানে রেহেনার গর্ভপাত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আবু নোমান বলেন, ভর্তি হওয়ার পর অন্তঃসত্ত্বা নারী ব্লিডিংয়ের কথা জানিয়েছিলেন। আজ (বুধবার) পরীক্ষায় তাঁর গর্ভপাতের তথ্য পাওয়া গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে রংপুরে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। পরে শুনেছেন। আর অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের তথ্য সঠিক নয়।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা বলেন, মঙ্গলবার তারা লিখিত অভিযোগ দিলেও কিছু ভুল ছিল। সেগুলো সংশোধন করে আজ (বুধবার) অভিযোগ দিয়েছে। মামলা গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।