সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজস্ব আদায়ে গতি ফিরে এলেও বছর শেষে একটি বড় ধরণের রাজস্ব ঘাটতির সম্মুখীন হতে চলেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এই ঘাটতির পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথে একটি ঋণ চুক্তির মধ্যে রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় রাজস্ব আয়ের একটি টার্গেটও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের হার যেভাবে এগুচ্ছে তা এই টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হবে না। ফলে ঋণের বাদবাকি কিস্তি সংস্থাটির কাছ থেকে পেতে বেশ বেগ পেতে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এনবিআর পরিসংখ্যানে দেখা যায়,  চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। তা স্বত্বেও গত আট মাসে ২ লাখ ৮০ কোটি   টাকার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৮১৭  টাকা। কিন্তু আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। টার্গেট অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতি ২১ শতাংশ কম ছিল।

অন্যদিকে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ লাখ ১৭ হাজার ৯৭১ কোাটি টাকা। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায় হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে টানা তিন মাস রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।

এনবিআরের তথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্ব আদায় বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ, যা এর আগের মাস জানুয়ারিতে ছিল প্রায় ৭ শতাংশ। 

এ বিষয়ে এনবিআর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোন গবেষণা ছাড়াই প্রতিবছর একটি বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বছর শেষে এসে দেখা যায়, মূল্য লক্ষ্যমাত্রা তো দূরের কথা সংশোধিত আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাও সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন পণ্য দাম কমানোর জন্য এই সকল পণ্য’র ওপর কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এতে করে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। তবে বছরের বাদবাকি সময়ে এই আদায় আরও বাড়বে বলে আমাদের ধারণা।”

এদিকে, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আদায় হোক বা না হোক, আগামী তিন অর্থবছরের জন্য মোট ১৮ লাখ ৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের একটি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হবে এনবিআরকে। 

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে রাজস্বখাত থেকে আয় করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে পাঁচ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ছয় লাখ ৫৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। একই অর্থবছরে এনবিআর থেকে আসবে পাঁচ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে সাত লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে আদায়ের পরিকল্পনা প্রাক্কলন করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। 

এদিকে, বাজেট পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিবছর বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে মূল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, সেটি অর্জন করা তো দূরের কথা, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্জন করা সম্ভব হয় না। গত আট অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এর মধ্যে এনবিআর-এর আওতাধীন রাজস্ব ঘাটতিই সবচেয়ে বেশি। আর এই ধরণের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাকে একধরণের ‘সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)।

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য বাধ্যতামূলক করার আহ্বান

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়ায় অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অভিযোগ তদন্ত করা ও পদক্ষেপ নেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটি: বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা নেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রস্তুত করা যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়াতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত অভিযোগ কমিটিতে বাইরের কাউকে রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে বাইরের সদস্য রাখা যাবে।

বিবৃতিতে বলা হয় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এক রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করতে অভিযোগ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। ওই অভিযোগ কমিটিতে প্রতিষ্ঠানের বাইরের দুজন সদস্য রাখার কথা বলা হয়েছে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, যৌন হয়রানির ঘটনায় বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণে অনেক সময় ব্যত্যয় ঘটে। অভিযোগ কমিটির কাজ বস্তুনিষ্ঠ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার জন্য কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা থাকা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়াতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে হেবা সম্পত্তী সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলায় থানায় অভিযোগ 
  • গার্ডিয়ানে কাজ করা গাজার সাংবাদিক পেলেন ব্রিটিশ জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ডস
  • ট্রাম্প অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিলেও থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে লড়াই চলছে
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ
  • ড্রাগন ফল বিক্রি করে কারও আয় ১০ লাখ, কারও ১৫ লাখ টাকা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫)
  • সংসদ নির্বাচনের একই দিনে পৃথক ব্যালটে গণভোট, প্রজ্ঞাপন জারি
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১২ ডিসেম্বর ২০২৫)
  • যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য বাধ্যতামূলক করার আহ্বান
  • ডিসেম্বরে ১০ দিনে প্রবাসী আয় ১২৯ কোটি ডলার