টিউশনি করা উপদেষ্টারা আজ ৬ কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন: বুলু
Published: 3rd, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, যারা কিছু দিন আগেও টিউশনি করে নিজেদের পড়াশোনা ও হাত খরচ চালাতেন; আজ তারা ৬ কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার করেন। ৩০ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি পরেন। কেউ আবার শত শত গাড়ির বহর নিয়ে এলাকায় গণসংযোগ করেন। আবার কেউ কেউ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ইফতারপার্টি করেন। কোনো কোনো উপদেষ্টা বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে আমলাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বড় বড় কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ বিভিন্ন দপ্তরে অযোগ্য লোকদের পদায়ন করেন। এসব অপকর্ম থেকে জাতি মুক্তি চায়। এ জন্যই নির্বাচন দরকার।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বেগমগঞ্জ উপজেলার শহীদদের পরিবারের মাঝে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চৌমুহনী ব্যাংক রোডে হ্যাং আউট চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
গণভোট সর্ম্পকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, যারা অনির্বাচিত সরকারের চিন্তা-ভাবনা করেন; তারাই গণভোট বা হ্যাঁ-না ভোটের পক্ষে কথা বলেন। জাতিকে রক্ষা করতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, যারা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে চায়, তারা স্বাধীনতার শত্রু। ৫ আগস্ট সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যদি হেলিকাপ্টারযোগে ফ্যাসিস্ট সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে ভারতে না পাঠাতেন; তাহলে দেশে আরেকটি ঘটনা ঘটতো। এটা জাতির জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াত। সেনাবাহিনী যুগযুগ ধরে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশের সূর্যসন্তান।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের শহীদরা বাংলার চেতনার বাতিঘর, তাদের জীবন দিয়ে এদেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত করে আমাদেরকে ঋণী করেছেন।
বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রুস্তম আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শামীম বরকত লাকী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌর বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন, সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলমসহ আরও অনেকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।