পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ছাগল খোঁয়াড়ে দেওয়ার জেরে সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার উপজেলার শালডাঙা ইউনিয়নের অমরখানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, প্রথমে মরিচ খেত নষ্টের অভিযোগে ছাগল খোঁয়াড়ে দেওয়া এবং পরে খোঁয়াড়ে দেওয়ার জেরে মরিচ খেতের মালিক ও তার ভাইদের মারপিটের করার ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, একই এলাকার কৃষক লিপন ইসলাম, তার দুই ভাই স্বপন ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক।

এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার ভুক্তভোগীর ভাই লিটন ইসলাম বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ রাতেই মামলার প্রধান আসামি রাব্বি হোসেনকে গ্রেপ্তা‌র করে।

রাব্বি শালডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য। রাব্বির দুই ভাই বাবলু ইসলাম ও জুয়েল রানাও একই মামলায় আসামি। তারা একই ইউনিয়নের অমরখানা গ্রামের নাছিরুল ইসলামের ছেলে।

মামলার নথি ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লিপন ইসলামের মরিচ খেত খেয়ে নষ্ট করে রাব্বিদের ছাগল। খেত নষ্ট করার কারণে ২টি ছাগল খোঁয়াড়ে দিয়ে আসেন লিপন। এতে ক্ষিপ্ত হন রাব্বিরা। তারা খোঁয়াড় থেকে ছাগল ছাড়িয়ে এনে পুনরায় বেশ কয়েকটি ছাগল লিপনের খেতে ছেড়ে দিয়ে ওঁৎ পেতে থাকেন। পরে লিপন পুনরায় ছাগল ধরতে গেলে তার ওপর আক্রমণ চালান রাব্বি ও তার লোকজন। এসময় লিপনের অন্য দুই ভাই ঘটনাস্থলে গেলে তারাও আক্রমণের শিকার হন।

গুরুতর আহত অবস্থায় লিপন ও তার দুই ভাইকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

এছাড়া একই ঘটনায় রাব্বির দুই ভাই জুয়েল হক ও বাবলু হক আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারাও বর্তমানে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য রাব্বির স্ত্রী সাবিনা আক্তার বলেন, ঘটনার সময় আমার স্বামী টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের বটতলী এলাকার খালেক ডাক্তারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন। মারামারির ঘটনায় তিনি কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। তাকে মিথ্যা অভিযোগে আটক করা হয়েছে। 

দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা.

আবু নেমান বলেন, রোগীদের মাথায় একাধিক জখম ছিল, সেজন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুর মেডিকালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তা‌র করে (শনিবার) আদালতে পাঠানো হয়েছে। কে জড়িত ছিল আর কে ছিলো না, তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ উপজ ল ঘটন য় ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু 

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫২) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (১৪ জুন) তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শনিবার (১৪ জুন) রাতে চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং সদস্য সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে অভিযুক্ত রহিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরো পড়ুন:

পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী

ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু 

নিহতের ভাই মো. জসিম উদ্দিন জানান, দক্ষিণ চর আবাবিলের উদমারা এলাকায় জুয়ার আসর ও মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় ৩ এপ্রিল স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর শনিবার (১৪ জুন) তিনি মারা যান।

পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীর আলম উদমারা সাহাদু উল্যা মাঝিবাড়ি জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মসজিদের আশপাশে মাদক ও জুয়া বন্ধে তার ভূমিকার কারণে কিশোর গ্যাংয়ের বিরাগভাজন হন তিনি। হামলায় নেতৃত্ব দেন কিশোর গ্যাং সদস্য জুবায়ের, বাহার ও সাব্বির।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম ৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে রায়পুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং ১০ এপ্রিল মামলা রুজু হয়।

এর আগে একই এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় সুদেব শীল মনু নামে একজন নিহত হন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করলেও থামেনি কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। 
 

ঢাকা/লিটন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ