গোপালগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
Published: 11th, April 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার উপজেলার পৃথক দুটি স্থানে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) কোটালীপাড়া উপজেলার চৌরখুলী গ্রাম ও মদনপাড়া গ্রামের এসব ঘটনা ঘটে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত শিশুরা হলো, কোটালীপাড়া উপজেলার চৌরখুলী গ্রামের জসিম শেখের ছেলে আড়াই বছর বয়সের ওমর ফারুক ও মদনপাড়া গ্রামের মশিউর হাজরার মেয়ে আট বছর বয়সের নুসরাত খানম।
ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, শুক্রবার সকালের চৌরখুলী গ্রামের জসিম শেখের স্ত্রী শিশু ছেলে ওমর ফারুককে উঠানে বসিয়ে তার মা জামা কাপড় ধুতে পুকুর ঘাটে যায়। কিছুক্ষণ পরে ওমর ফারুক না পেয়ে চারিদিকে খোঁজাখুজি করা হয়। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের পুকুরে ওমর ফারুককে পুকুরে পানিতে ভাসতে দেখা যায়। পরে পুকুর থেকে স্বজনরা উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরো জানান, প্রায় একই সময়ে বাড়ির পাশে ভেকু মেশিন দিয়ে মাছের ঘের কাটা দেখতে যায় নুসরাত খানম। পরে বাড়ি ফেরার পথে বিজয় মাস্টারের মাছের ঘেরে পড়ে যায়। পাশের বাড়ির এক শিশু নুসরাত পানিতে পড়ে গেছে বলে খবর দিলে স্বজনরা গিয়ে নুসরাতকে উদ্ধার করে। পরে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরো বলেন, “এ ঘটনায় পরিবার দুটির পক্ষ থেকে কারো প্রতি কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ঢাকা/বাদল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওমর ফ র ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল