বন্দরে সৎ ভাই ও তার স্ত্রী সন্ত্রাসী হামলায় প্রবাসী ফেরৎ বড় ভাইসহ আহত ৩
Published: 12th, April 2025 GMT
বন্দরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পাষান্ড সৎ ভাই ও তার স্ত্রী সন্ত্রাসী হামলায় প্রবাস ফেরৎ বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জনি (৪০) রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে বড় বোন রিনা বেগম (৪৮) ও ভাগ্নিা ইফাত (১৭) আহত হয়।
জখমপ্রাপ্ত প্রবাস ফেরৎ জহিরুল ইসলাম জনি বন্দর থানার এইচ এম সেন রোডস্থ রাজবাড়ি বালুর মাঠ এলাকার মোবারক মোল্লার ছেলে। শনিবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টায় বন্দর রাজবাড়ি বালুর মাঠে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বড় ভাই বাদী হয়ে সন্ত্রাসী সৎভাই ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ওরফে রোহান ও তার স্ত্রী শাহারিয়া তাসনিম শিখাসহ আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার এইচ এম সেন রোডস্থ রাজবাড়ি বালুর মাঠ এলাকার মোবারক মোল্লার ছেলে জহিরুল ইসলাম জনি দীর্ঘ দিন ধরে মালেশিয়া প্রবাসে জীবন যাপন করে সম্প্রতি দেশে আসে।
প্রবাস ফেরৎ বড় ভাই জহিরুল ইসলাম জনি প্রবাসে থাকাকালিন সময়ে সরল বিশ্বাসে তার সৎ ভাই খলিলুল্লাহ ওরফে রোহান ও তার পরিবারের নিকট নগদ ১৮ লাখ টাকা ও ৭ ভরি স্বর্নালংকার জমা রাখে।
এর ধারাবাহিকতা শনিবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টায় সন্ত্রাসী ছোট ভাই ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ ওরফে রোহানের হুকুমে অন্যান্য বিবাদীগন প্রবাস ফেরৎ বড় ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। ওই সময় জহিরুল ইসলাম জনি গালাগালি করতে নিষেধ করলে ওই সময় পাষান্ড সন্ত্রাসী ছোট ভাই ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ ওরফে রোহান ক্ষিপ্ত হয়ে বাটান মোবাইল দিয়ে চোখে সজোরে আঘাত করে কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
ওই সময় সৎ ভাইয়ের স্ত্রী শাহারিয়া তাসনিম শিখাসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী প্রবাস ফেরৎ বড় ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্য লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে নিলাফুলা জখম করে। ওই সময় চিৎকারের শব্দ পেয়ে বড় বোন রিনা বেগম ও ভাগ্নিা ইফাত এগিয়ে আসলে উল্লেখিত হামলাকারীরা তাদেরকে পিটিয়ে জখম করে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পরে স্থানীয়রা জখম অবস্থায় উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ সৎ ভ ই
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।