বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 14th, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বা পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজকে সবাইকে আপন করে নেওয়ার দিন। এবারের নববর্ষ, নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন, আমরা বিগত বছরগুলোর গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চলুন, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং তা এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের এসব ঐতিহ্য শুধু যেন নিজেদের মধ্যেই না থাকে, আমাদের সংস্কৃতি যেন আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি বিশ্বদরবারে। বছরের এই দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই আমাদের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসবমুখর পরিবেশে তুলে ধরতে এবং পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে।’
তিনি বলেন, পয়লা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন, আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষবরণের দিন।
‘ফসলি সন’-এর ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলা সন গণনা শুরু হয়েছিল কৃষিকাজের সুবিধার জন্য, ‘ফসলি সন’ হিসেবে। এখনো এ দেশের কৃষকেরা বাংলা তারিখের হিসেবেই বীজ বোনেন, ফসল তোলেন।
বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘হালখাতা’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এখনকার আধুনিক সময়েও এখনো এই হালখাতার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন বাংলাদেশের হাটবাজারে, শহরে-বন্দরে। নববর্ষের বৈশাখী মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখা ইত্যাদি তৈরি করে নিজেদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরেন এই দিনের উপলক্ষে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্রসংক্রান্তি ও নববর্ষে এবার বড় পরিসরে উৎসব উদ্যাপন করেছেন।
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সকলের জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক—এই কামনা করছি।’
অধ্যাপক ইউনূস নববর্ষের সব আয়োজন ও উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নববর ষ র ল দ শ গড় আম দ র স র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মক্ষেত্রে অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন
শ্রমিক অধিকার আদায়ের দিন মহান মে দিবস আজ। কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য– ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠন বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনটি উপলক্ষে বুধবার দেওয়া বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম; দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সরকারি অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে– সকাল সাড়ে ৭টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে শোভাযাত্রা। শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এর উদ্বোধন করবেন।
মে দিবস উপলক্ষে গতকাল দেওয়া বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ দুঃখ-কষ্টে জীবনযাপন করছেন। গত বছর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা। এতে ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলার নেতাকর্মী অংশ নেবেন।
এ উপলক্ষে গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, শ্রমজীবী মানুষের আয় দিন দিন কমে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল ৯টায় পল্টনে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী। উপস্থিত থাকবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।