স্কটিশ বেশে বাঙালি কাঁটা প্রিয়ানাজকে রুখে জ্যোতিদের জয়
Published: 15th, April 2025 GMT
পাকিস্তানে ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ ২৭৬ রান করেছিল বাংলাদেশ। রেকর্ড রান করে বড় জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়ে ৩৪ রানে জিতেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
লোয়ার মিডলে স্কটল্যান্ডের বাঙালি ক্রিকেটার প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জি কাঁটা হয়ে দাঁড়ান। তার সঙ্গে ফিফটি করেন নয়ে ব্যাট করা র্যাচেল স্লাটারও। তাদের রুখে স্কটল্যান্ডকে ৯ উইকেটে ২৪২ রানে আটকে টানা তৃতীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল নারী ক্রিকেটাররা। এরপর হারের শঙ্কায় পড়েও আয়ারল্যান্ডকে হারায় ২ উইকেটে। টানা তিন জয়ে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা জোরালো হলো।
মঙ্গলবার লাহোরের স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ওপেনিং জুটি না জমলেও ফারজানা হক ও তিনে নামা শারমিন আক্তার সুপ্তা ১০৩ রান যোগ করেন। শারমিন ফিরে যান ৭৯ বলে ৫৭ রান করে। সাতটি চার মারেন তিনি।
পরেই আউট হন ফারজানা। তার ব্যাট থেকে ৮৪ বলে ৫৭ রানের ইনিংস আসে। ছয়টি চারের শট মারেন এই ওপেনার। এরপর নিগার সুলতানা ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের রান বড় করেন। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার ৫৯ বলে ৮৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট ১১টি চারের শট আসে। এছাড়া ঋতু মনি ১২ ও ফাহিমা খাতুন ২২ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন।
জবাব দিতে নামা স্কটল্যান্ডের শুরু থেকে উইকেট নিতে থাকে বাংলাদেশ। ৩১ রানে তাদের ৩ উইকেট নিয়ে নেয়। ১০২ রানে পড়ে ষষ্ঠ উইকেট। ১১০ রানে সপ্তম উইকেট হারায় তারা।
সেখান থেকে আটে নামা স্কটল্যান্ডের হয়ে খেলা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালী ক্রিকেটার প্রিয়ানাজ ও র্যাচেল ১১৫ রানের জুটি গড়েন। প্রিয়ানাজ ফিরে যান ৬৩ বলে সাত চারের শটে ৬১ রান করে। র্যাচেল হার না মানা ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের স্পিনার নাহিদা আক্তার ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। জান্নাতুল নেন ২ উইকেট।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স কটল য ন ড র র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানাতেই শ্রমিকের ‘আত্মহত্যা’, ছুটি ঘোষণা
গাজীপুরে একটি কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কারখানাতেই এক শ্রমিক বিষাক্ত কেমিক্যাল পানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় রাতের পালার কাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এরপর কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী (২৩) উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার কার্টন সেকশনে কাজ করতেন।
কারখানার বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, এক বছর হয়ে গেলেও ইদ্রিস আলীর চাকরি এখনো স্থায়ী করা হয়নি। স্থায়ী করার বিষয়ে তিনি যখনই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেছেন, তখনই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এ ছাড়া তিনি নানা বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হতাশার মধ্যে ছিলেন। গতকাল রাতের পালার কাজ চলাকালে কোনো এক সময় ইদ্রিস আলী কারখানার কেমিক্যাল পান করেন। পরে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইদ্রিস আলী মৃত্যুর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, এক বছর ধরে তিনি চাকরি করছেন। কিছু মানুষ আসার তিন মাস, ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ী হচ্ছেন, কিন্তু তাঁর চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। কারখানার দুজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে, ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব।’
কারখানার শ্রমিকেরা বলেন, ওই দুই কর্মকর্তা যোগ দেওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার করছেন। তাঁরা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। কথায় কথায় চাকরি থেকে ছাঁটাই করেন। অবিলম্বে তাঁদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। না হলে আরও শ্রমিক মারা যাবেন।
এ বিষয়ে মনট্রিমস্ লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কারখানার একজন শ্রমিক বিষজাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কেন বা কী কারণে, জানতে চাইলে তিনি সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি আর ধরেননি।
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. যোবায়ের বলেন, গতকাল মধ্যরাতে এক শ্রমিক কারখানার ভেতরে বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।