হাতাহাতি, খেলা বন্ধ, এরপর ইনসানের গোলে ফাইনালে কিংস
Published: 15th, April 2025 GMT
দুই–দু্ইবার ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপার দেখা পায়নি রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। এবার নিজেদের ইতিহাসটা নতুন করে লেখার স্বপ্নই দেখেছিল পুরান ঢাকার দলটি। কিন্তু হলো না!
বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে ১২৬ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ২–১ গোলে হেরেছে কামাল বাবুর দল। আর পঞ্চমবারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে গোল করে কিংসের কাছে বিকেলটা আনন্দময় করে তোলেন বদলি নামা অখ্যাত তরুণ ইনসান হোসেন।
২২ এপ্রিল ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভালেরিও তিতার দলের প্রতিপক্ষ আবাহনী লিমিটেড। প্রথম কোয়ালিফিয়ারে যাদের কাছে টাইব্রেকারে ৪–২ গোলে হেরেছিল কিংস।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আজ ম্যাচের ১১১ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ১–১। কিন্তু এক ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে চলে হাতাহাতি, চার মিনিটের মতো খেলা বন্ধ থাকার পর ছন্দপতন হয় রহমতগঞ্জের। সেই সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগায় কিংস।
১০৭ মিনিটে রহমতগঞ্জের তাজ উদ্দিন ফাউল করেন তাঁরই ভাই কিংসের সাদ উদ্দিনকে। সেই ফাউল নিয়ে কিংসের মজিবুর রহমান আর রহমতগঞ্জের আক্কাস আলীর মধ্যে খানিকটা হাতাহাতি লেগে যায়। মুহূর্তেই দুই দলের খেলোয়াড়েরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান।
তার একটু পরই পোস্ট ছেড়ে ডাগআউটের দিকে চলে আসতে দেখা যায় রহমতগঞ্জের গোলকিপার আহসান হাবিবকে। রেফারি জালাল উদ্দিন ও ম্যাচ কমিশনার মিলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। প্রায় চার মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর ম্যাচ আবার শুরু হয়।
এরপর ১১২ মিনিটে ডান প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠে কিংস। রাকিবের লম্বা ক্রস থেকে হেডে গোল করেন ইনসান। শেষ পর্যন্ত তাঁর গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
এর আগে ৭৪ মিনিটে নাবিব নেওয়াজের পাস থেকে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান রহমতগঞ্জের সলোমন কিং। গোল শোধ করতে অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি কিংসকে। ৮১ মিনিটে সাদ উদ্দিনের ক্রস থেকে আলতো শটে বল জালে পাঠান রাকিব হোসেন।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে ওঠে কিংস। দুই মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে গোলমুখে ক্রস দেন ইভান্স ইত্তি। রহমতগঞ্জের এলোমেলো রক্ষণভাগ পেয়েও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি হুয়ান লেসকানো। তাঁর মাথা ছুঁয়ে বল খানিকটা দিক বদলায়। সেই আলগা বল ডি–বক্সে পেয়েও নিশানায় শট নিতে পারেননি রাকিব।
এর ঠিক এক মিনিট পর আরেকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কিংসের এই ফরোয়ার্ড। বক্সের বাঁ পাশ থেকে বল বাড়িয়ে দেন আর্জেন্টাইন লেসকানো। অরক্ষিত পোস্ট পেয়েও সেই বল জালে পাঠাতে পারেননি রাকিব।
কিংসের আক্রমণ ঠেকিয়ে যাওয়া রহমতগঞ্জ ২৭ মিনিটে ফ্রি–কিক পায়। কিন্তু সলোমন কিংয়ের নেওয়া সেই কিকে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি কেউ। ৩৪ মিনিটে রহমতগঞ্জের স্ট্রাইকার স্যামুয়েল বোয়াটেং কিংসের দুজন খেলোয়াড়কে কাটালেও শেষ পর্যন্ত তপু বর্মণের বাধায় আটকে গেছেন।
৪০ মিনিটে লেসকানোকে ফাউল করেন রহমতগঞ্জের শাকিল। শেখ মোরছালিনের ফ্রি–কিক পোস্টের পাশ দিয়েই চলে যায়। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও তিনটি দারুণ আক্রমণ তৈরি করেও গোল আদায় করতে পারেনি কিংস।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।