আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 19th, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ও ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপদেষ্টা আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলের তিনটি থানা (বিমানবন্দর, উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথাগুলো জানান।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও উন্নত হবে।
১৮ কোটি মানুষের দেশে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ নয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘যেকোনো কাজ করতে গেলে কিন্তু সময় প্রয়োজন, একইভাবে আমাদের সময় দিন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে।’
উপদেষ্টা এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ও ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো রকম নিষ্ক্রিয়তা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আজকের পরিদর্শনের মূল উদ্দেশ্য ছিল পুলিশের অধস্তন ফোর্সের থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিদর্শনকালে আমি দেখেছি, তাদের থাকার ব্যবস্থা খুবই খারাপ। কীভাবে এটিকে উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। সে জন্য বিভিন্ন থানা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখছি। পুলিশের অধস্তন ফোর্সের থাকা-খাওয়ার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জনদুর্ভোগ নিরসন ও থানার সেবার মান আরও উন্নত করার লক্ষ্যে রাজধানীর প্রতিটি থানা নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করা হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের চেষ্টা চলছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নয়টি থানা নিজস্ব জায়গায় স্থানান্তর করা হবে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য থানাও নিজস্ব জায়গা ও ভবনে স্থানান্তর করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলায় যাতে কাউকে হয়রানি না করা হয় সে জন্য পুলিশকে অনেক আগে থেকেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট ওসিদের নির্দেশ দেন।
পরে উপদেষ্টা পল্লবী থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
বাম দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: ‘তফসিল হয়েছে, তবে সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশের বাম দলগুলো।
তারা দাবি করছেন, তারিখ ঘোষণার পরও মাঠে এখনো কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি,বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জনমনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বিত ও দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন জরুরি।
আরো পড়ুন:
অসত্য তথ্য ছড়ানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ: সিইসি
তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “১৭ বছর পর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারে এই তফসিল। জনগণও নিজেদের দল ও প্রতীকে ভোট দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। ১২ ফেব্রুয়ারি সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি মনে করেন, “একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে নতুন অভিযাত্রার ইঙ্গিত হলেও সামনে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।”
“একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন, তা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের আস্থা ফেরানো জরুরি। ভোটে টাকার খেলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে”, বলেন সাইফুল হক।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স তফসিল ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি মুহূর্তে ইসি ও সরকারকে এমন সব পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দেখলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে, এবার সত্যিকার অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।”
তিনি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “প্রার্থী হওয়া ও ভোট দেওয়ার সমান সুযোগ সবার জন্য নিশ্চিত করতে ইসিকে আরো সক্রিয় হতে হবে। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদকে পুনর্গঠন করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতার বার্তা আরো দৃশ্যমান করতে হবে।”
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “বহুল প্রত্যাশিত তফসিল ঘোষণায় স্বস্তি এসেছে, তবে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ এখনো মসৃণ নয়।”
“নির্বাচনকে টাকার প্রভাব, পেশিশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা এবং প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত করতে হবে। সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে”, যোগ করেন তিনি।
সরকার, ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা এবং জরুরি উদ্যোগ ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন বজলুর রশীদ ফিরোজ।
ঢাকা/এএএম/রাসেল