জয়ের ব্যাটে রান দেখতে আর কত অপেক্ষা?
Published: 21st, April 2025 GMT
অভিষেকে শূন্য রানে আউট হলেও মাহমুদুল হাসান জয়ের টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালোই ছিল। দ্বিতীয় টেস্টেই মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ৭৮ রানের ধৈর্যশীল এক ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। পরের টেস্ট তো ডারবানে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১৩৭ রানের স্মরণীয় এক ইনিংস খেলেছিলেন তরুণ এ ওপেনার। কিন্তু সেই প্রতিভাবান জয়ের এ কী হাল! গত ১৬ ইনিংসে তাঁর ব্যাটে কোনো ৫০ নেই।
ইদানীং অফস্টাম্পের বাইরের বলে জয়ের দুর্বলতা প্রকট হয়ে উঠেছে। গত নভেম্বরে উইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের চার ইনিংসেই অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন তিনি। চার ইনিংসের একটিতেও দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। শুধু তাই নয়, অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টেও একইভাবে আউট হয়েছিলেন তিনি। এমনকি দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনারের অফস্টাম্পের বাইরের বলেও স্লিপে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন। গতকালও নিয়াউচির অফস্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি ১৪ রান করে। নিয়াউচির আগের ওভারেই ড্রাইভ করতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়েছিলেন সাদমান। এর পরও সতর্ক হননি জয়।
সর্বশেষ জয়ের ব্যাটে হাফ সেঞ্চুরির দেখা মিলেছিল ২০২৩ সালের নভেম্বরে। এই সিলেটেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এর পর থেকে চলছে খরা। শুরুতেই উইকেট হারানোর প্রভাব পড়ছে পুরো ব্যাটিং লাইনের ওপরই। গত বছর দুয়েক ধরেই এই চাপে আছেন তারা। বাংলাদেশের ওপেনিং এ নিয়ে টানা ১২ ইনিংস ৫০ ছুঁতে ব্যর্থ হলো। তার পরও মন্দের ভালো হলো, গত কিছুদিনের মধ্যে এই ৩১ রানই ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ।
আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামের অবস্থাও ভালো না। গত সাত ইনিংসে তাঁর হাফ সেঞ্চুরি মাত্র একটি। টানা ব্যর্থতার পরও এই ওপেনারদের কেন এখনও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে? জিম্বাবুয়ে সিরিজের দল নিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কাছে এ প্রশ্ন রেখেছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
তিনি বলেছিলেন, তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ হওয়ায় এ সিরিজে ফর্মহীন ওপেনারদের রানে ফেরার সুযোগ দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু প্রথম সুযোগটি পায়ে ঠেললেন তারা। টেস্টে সবচেয়ে কঠিন সময় দিনের প্রথম ঘণ্টা। হতাশার ব্যাপার হলো, সেই কঠিন সময়টা পার করে উইকেটে সেট হওয়ার পর ক্যাচ দিয়ে আসেন দুই ওপেনার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।