লিগ জয় থেকে আর কত ম্যাচ দূরে বার্সেলোনা
Published: 23rd, April 2025 GMT
লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে প্রতিটি ম্যাচই এখন ফাইনালের মতো। একটা ভুলেই যেখানে এলোমেলো হয়ে যেতে পারে শিরোপা স্বপ্ন। তেমনই এক ম্যাচে গতকাল রাতে মায়োর্কাকে ১–০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। বার্সার জয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একমাত্র গোলটি করেছেন দানি ওলমো।
এই জয়ের পর তালিকার ২ নম্বরে রিয়ালের চেয়ে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে গেল বার্সা। তবে আজ রাতে হেতাফের বিপক্ষে জয় পেলে আবারও সেই ব্যবধান ৪ পয়েন্টে নামিয়ে আনতে পারবে রিয়াল। এবারের লিগ শিরোপার লড়াইয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি রিয়াল–বার্সা খেলবে আগামী ১১ মে। এল ক্লাসিকোতে সেদিন একে অপরের মুখোমুখি হবে তারা।
সেই ম্যাচ জিতলে বার্সার শিরোপা একরকম নিশ্চিতই হয়ে যাবে। আর রিয়াল যদি জেতে, তবে তারা বার্সার সঙ্গে লড়াইটা শেষ পর্যন্ত জমিয়ে রাখতে পারবে। তবে এল ক্লাসিকোর ওপর মনোযোগ দিলেই অবশ্য চলবে না। বাকি ম্যাচগুলোতে জয় যেন কোনোভাবে হাতছাড়া না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে দুই দলকে।
আরও পড়ুনবার্সেলোনাকে হারিয়েই জোড়া শিরোপা জিততে চান আনচেলত্তি৯ ঘণ্টা আগেএখন কাগজে–কলমের হিসাবে আসা যাক। রিয়াল যদি আজ রাতে হেতাফে ও ৪ মে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে জেতে, তবে তাদের পয়েন্ট হবে ৩৪ ম্যাচে ৭৫। অন্যদিকে বার্সা যদি ৩ মে ভায়াদোলিদকে হারায়, তবে তাদের পয়েন্ট ৩৪ ম্যাচে ৭৯। অর্থাৎ এল ক্লাসিকোতে সেই ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থেকেই রিয়ালের মুখোমুখি হবে তারা।
আর ঘরের মাঠে রিয়ালকেও যদি হারাতে পারে, তবে ৩৫ ম্যাচ শেষে বার্সার পয়েন্ট ৮২, যা তাদের এগিয়ে দেবে ৭ পয়েন্ট। এরপর ১৫ মে কাতালান ডার্বিতে বার্সা মুখোমুখি হবে এস্পানিওলের। সেদিনও যদি বার্সা জেতে, তবে তাদের পয়েন্ট হবে ৩৬ ম্যাচে ৮৫।
আরও পড়ুনঅসাধারণ এক জয়ের পর বড় দুঃসংবাদ পেল বার্সেলোনা২০ এপ্রিল ২০২৫সেই জয়ের পর আর কোনো হিসাব ছাড়াই শিরোপা নিশ্চিত করবে হান্সি ফ্লিকের দল। অর্থাৎ লা লিগায় পরবর্তী ৩ ম্যাচ জিতলেই শিরোপা নিশ্চিত হবে বার্সার। আর রিয়াল যদি এর মধ্যে নিজেদের অন্য ম্যাচগুলোয় হোঁচট খায়, তবে বার্সার শিরোপা নিশ্চিত হতে পারে আরও আগে।
গতকাল রাতে বার্সার ন্যূনতম ব্যবধানের জয় অবশ্য ম্যাচের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারছে না। মায়োর্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে বার্সা ৭৮ শতাংশ বল দখল রেখে সব মিলিয়ে শট নিয়েছিল ৪০টি। ১২টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটির বেশি গোল পায়নি কাতালান ক্লাবটি।
শিরোপার আরেকটু কাছে বার্সা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনূস-তারেক সফল বৈঠকে স্বপ্নভঙ্গ হলো যাদের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বৈঠক দেশের রাজনীতির মোড় অনেকটাই ঘুরিয়ে দিয়েছে। নানা অনিশ্চয়তা, শঙ্কা, গুজব রাজনীতিকে ঘিরে ধরেছিল। একধরনের অনাস্থার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এ বৈঠক অনিশ্চয়তা, শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে দিয়ে রাজনীতিতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।
পারস্পরিক যে কাদা ছোড়াছুড়ি, দুর্নাম করার রাজনীতি, সেখান থেকে বেরিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরিতে সহায়তা করবে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চললেও বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে। এটা আমাদের রাজনীতিতে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
বৈঠকটি সারা দেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এখন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। মানুষের ধারণাকে বাস্তবে রূপদান করার দায়িত্ব সরকারের।
বিএনপি এর আগে ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলেও কিছুটা সরে এসে ফেব্রুয়ারির সময়সীমাকে মেনে নিয়েছে। সরকারও এপ্রিল থেকে সরে এসে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। উভয় পক্ষেরই কিছুটা সরে আসা, কিছুটা ছাড় দেওয়া—এটাই আমাদের রাজনীতি থেকে একদম হারিয়ে গিয়েছিল।
রাজনীতি মানেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে শত্রুতা করতে হবে, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শুধু কথায় কথায় উদার হলে হবে না। কাজে-কর্মেও উদারতা দেখাতে হবে। লন্ডনের বৈঠকে সেই উদারতার কিছু নমুনা আমরা দেখতে পেলাম।
আরও পড়ুনলন্ডনে ইউনূস-তারেকের আলোচনায় বিএনপিরই কি জিত১৩ জুন ২০২৫বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আলোচনার ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে। তা নিয়ে আপাতত আলোচনার কিছু নেই। আমরা বরং রাজনীতিতে এ বৈঠকের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি। প্রথমত, এ বৈঠক সারা দেশের মানুষকে আশান্বিত করলেও রাজনীতির কোনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি হতাশ হয়েছেন।
এসব গোষ্ঠীর মূল কাজ যেন বিএনপিকে যে কোনোভাবে ঠেকানো। ব্যক্তি পর্যায়ে যারা হতাশ হয়েছেন তাদের মধ্যে রাজনীতিবিদ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা আছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্যই ছিল, যেকোনো প্রকারে বিএনপির রাজনীতিকে প্রতিহত করা। এ অংশ চাইছে না বিএনপির রাজনীতি সামনের দিকে এগিয়ে যাক। বিএনপির নেতৃত্বে নতুন করে বাংলাদেশের বিনির্মাণ হোক।
কেউ যদি সহজ রাজনীতির পথ পরিহার করে অহেতুক কুটিল ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তবে তারা নিজেরাই রাজনীতি থেকে হারিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও জাসদ আমাদের সামনে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।বিএনপি যে শত ভাগ শুদ্ধ ও সঠিক রাজনীতি করছে, এটা বলা যাবে না। ভুল-ত্রুটি বিএনপিরও আছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, হত্যাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি নিজ দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এই পর্যন্ত চার হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে এসব কর্মকাণ্ডের জন্য। দেশের ইতিহাসে কোনো দল নিজেদের এতসংখ্যক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেনি। এ ধরনের অপরাধ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীরাই করছেন না। বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরাও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এটা আমাদের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাগবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের রাজনীতি এই অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই রাজনৈতিক সরকার লাগবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
এ ধরনের পরিস্থিতি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তিরও প্রয়োজন হয়। বিকল্প অর্থনৈতিক কর্মসূচিও লাগে। এ জন্যই বিএনপি বারবার নির্বাচনের কথা বলে আসছে। আমরা মনে করি, নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক অবস্থান উন্নতি ঘটবে। বিএনপির বিকল্প অর্থনৈতিক পরিকল্পনা আছে।
বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা