ঢাকার দর্শকদের জন্য নতুন নাটক মঞ্চে এনেছে নাট্যদল ‘তাড়ুয়া’। নাম ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’। জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আজ বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির দুটি প্রদর্শনীর আয়োজন রাখা হয়েছে। এটি ‘তাড়ুয়ার’ চতুর্থ প্রযোজনা।

 এরিখ মারিয়া রেমার্কের উপন্যাস অবলম্বনে ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ নাট্যরূপ দিয়েছেন রুনা কাঞ্চন। নির্দেশনা দিয়েছেন বাকার বকুল। নির্দেশক বকুল বলেন, ‘‘পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া দুটি বিশ্বযুদ্ধের নির্মম ক্ষতচিহ্ন থাকার পরও পৃথিবীকে যুদ্ধাহত করা হচ্ছে বারবার। ভয়াবহ পারমাণবিক মারণাস্ত্রের চর্চা এবং যুদ্ধমুখী বিশ্বরাজনীতির গতিপথ এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে, যা পৃথিবীকে নিশ্চিহ্নের অশনিসংকেত। এমন বাস্তবতায় ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ মরণঘাতী যুদ্ধের নৃশংসতাকে উন্মুক্ত করার এক নাট্যপ্রয়াস।’’ 

নাটকের গল্পে দেখা যাবে, দেশের জন্য শিক্ষার্থীদের জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেন শিক্ষক কান্টারেক। জন্মভূমির জন্য জীবন দেওয়ার চেয়ে মহত্তম কিছু নেই– এ চেতনায় উজ্জীবিত হয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পল বাউমার ভালোবাসে প্রজাপতি, হতে চায় লেখক। কেমোরিখ হতে চায় ফরেস্ট অফিসার। বেন, মুলার ও আলবার্টেরও রয়েছে নিজেকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভবিষ্যৎ স্বপ্ন।

প্রতিকূল এই যুদ্ধপরিস্থিতিতে সব স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া পাঁচ বন্ধুর শরীরে ও চিন্তায় ঘোরে যুদ্ধের রোমান্টিসিজম। প্রশিক্ষণ শেষে কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হয় সবাই। কল্পনায় ভাবা যুদ্ধ বাস্তবে মেলে না। নৃশংস আর হিংস্রতায় ব্যক্তি এখানে মৃত্যুর জন্য তৈরি হওয়া শুধুই এক টুকরো মাংসপিণ্ড। এক সময় সৈনিকদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে, যুদ্ধটা আসলে কেন বাঁধে, কারা বাঁধিয়ে রাখে। প্রতিপক্ষ দেশের কেউ তো তাদের ক্ষতি করেনি, তাহলে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়া এই যুদ্ধ আসলে কাদের স্বার্থে।’

 নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন কুমার উদয়, তামিম আহমেদ, রিপন ঘোষ, জুবায়ের মাহমুদ, জীবন, অর্ণব, তারেক, সানি, সাক্ষ্য, কাইয়ুম, অভিজিৎ, ফরহাদ, অর্পিতা, মুন্নিসহ আরও অনেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ