একটা ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই চাই আরোহীর। সেটি কিনতে মামার সঙ্গে বইয়ের দোকানে ঢুকলো। দাদার বয়সী দোকানির চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। আরোহীকে দেখেই বললেন, ‘কি বই চাই আমার দাদা ভাইয়ের?’
অবাক কাণ্ড! আরোহীর মনে হলো দোকানি নয়, তার চোখে কচকচে কালো ভূতের মতো দেখতে মোটা ফ্রেমের চশমাটি কথা বলছে। মনে মনে বলল, ‘চশমাটি সত্যি সত্যি ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি দাদা বুঝতে পারলেন। এবার চশমাটি খুলে বললেন, ‘বলো দেখি কী বই চাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, দাদা ভাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের নয়, আমার কাছে টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
টয়ংকর ভূত! সে আবার কী রকম! ভেবে চমকে উঠল আরোহী। বলল, ‘নাহ! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
ওরা পাশের দোকানে প্রবেশ করলো। কাকুর বয়সী সেই দোকানির বিশাল গোঁফ! আরোহীকে দেখে গোঁফ নেড়ে নেড়ে বললেন, ‘বলুন আম্মাজান, কি বই আপনার চাই?’
এবারও একই কাণ্ড! আরোহীর মনে হলো দোকানি নয়, তার গোঁফটা নাচতে নাচতে বলছে, বলুন আম্মাজান, কি বই আপনার চাই? মনে মনে বলল, ‘গোঁফটাও ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি কাকু বুঝতে পারলেন। বুঝতে পেরে মুখের ওপর মাস্ক পরে গোঁফ ঢেকে বললেন, ‘এবার বলেন দেখি আম্মাজান, আপনার কি বই চাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, কাকু?’
‘আলবাৎ আছে! কিন্তু ভয়ংকর ভূতের নয়, টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
আবার টয়ংকর ভূত! আগের মতোই চমকে উঠল আরোহী। বলল, ‘নাহ্! নাহ্! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
ওখান থেকে বেরিয়ে ওরা আরেকটা দোকানে এলো। সেই দোকানে একজন মেয়ে বসে আছে। মেয়েটার নাকে ভারী সুন্দর নাক ফুল। আরোহীকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি বই চাই, আপিটার?'
আরোহী অবাক হয়ে দেখছে মেয়েটার নাকে উজ্জ্বল নীল রঙের নাক ফুল। যেন নাক ফুলটাই জিজ্ঞেস করছে। মনে মনে বললো, ‘নাক ফুলটাও ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি আপু বুঝতে পারলেন। নিজের হাতের তালুয় নাক ফুলটা লুকিয়ে রেখে বললেন, ‘আমার ছোট্ট আপিটার কি বই চাই বলো তো!’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, আপু?’
‘আছে! আছে! টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
সে কী! এখানেও টয়ংকর ভূত! এবার খুব বিরক্ত আরোহী। বললো, ‘নাহ! নাহ্! নাহ্! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
বাইরে এসে আরোহী মামাকে বললো, ‘এই টয়ংকর ভূতটা আবার কী, মামা?’
মামা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে ভূতের কতো গল্প শুনেছি। টয়ংকর ভূতের কথা আজকে প্রথম শুনলাম। মনে হচ্ছে এখানে কোথাও ভয়ংকর ভূতের বই পাবো না। আমরা বরং একটা টয়ংকর ভূতের গল্পের বই নিয়ে চলে যাই।’
যেই কথা সেই কাজ। ওরা অন্য আরেকটা দোকানে ঢুকলো। দেখে আরোহীর বয়সী একটা ছোট ছেলে বাবু বসে আছে। ওর হাতে কাঠি লজেন্স। লজেন্সের গায়ে আবার কি সব আঁকিবুঁকি। আরোহীকে দেখে বাবু বললো, ‘ভূতের বই-ই তো তোমার চাই, তাই না বন্ধু?’
যাহ্ বাবা! বাবু নয়, বাবুর লজেন্সটা কথা বলছে। তাই মনে হচ্ছে আরোহীর। এবার একটু ভয়ই পেলো সে। মনে মনে বললো, ‘লজেন্সটা ভূত নাকি!’
আরোহীর মনের কথা বাবুও বুঝতে পেরে পুরো লজেন্সটা মুখে পুরে দিল। বিড়বিড় করে বললো, ‘বলো, বন্ধু! কেমন ভূতের বই চাই তোমার?’
‘টয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, বন্ধু?’
‘টয়ংকর ভূতের নয়, আমাদের কাছে ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
‘এ কী কাণ্ড! ভয়ংকর ভূতের বই চাইলে বলছে টয়ংকর ভূত আছে, টয়ংকর ভূত চাইলে ভয়ংকর দিচ্ছে। এ কোন ভূতুড়ে খপ্পরে পড়লাম! আচ্ছা, বন্ধু! বলতে পারো ভয়ংকর ভূত আর টয়ংকর ভূতের মধ্যে তফাৎ কি?’ আরোহী বললো।
পাশ থেকে বাবুর বাবা আসে। তিনিই দোকানদার। আরোহীকে বুঝিয়ে বললেন, ‘টয়ংকর ভূতেরা দেখতে খুব মিষ্টি হয়। তা সত্ত্বেও ওদের গল্পগুলো কিন্তু ভয়ের, রহস্যঘেরা, অলৌকিক আবার মজারও। পড়তে পড়তে ভয়ও পাবে, মজাও পাবে। বাজারে এমন অনেক টয়ংকর ভূতের বই আছে। চশমা টয়ংকর ভূত, গোঁফ টয়ংকর ভূত, নাক ফুল টয়ংকর ভূত। আমার কাছেও একটা টয়ংকর ভূতের বই থাকতে পারে। দাঁড়াও, খুঁজে দিচ্ছি তোমায়।’
দোকানদারের বুক পকেটে ঠ্যাংঠ্যাঙে লম্বা ভূতের মতো দেখতে একটা কলম। বড় বড় চোখে কলমটার দিকে তাকিয়ে আছে আরোহী। ততক্ষণে একটি বই বের করে দিলেন তিনি। নাম ‘কলম টয়ংকর ভূত।’ বইটা দেখে সাংঘাতিক ভয় পেলো আরোহী, বেশ মজাও লাগছে তার।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৭ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
কোম্পানিগুলো হলো- কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসি, রংপুর ডেয়ারি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, মনোস্পুল বাংলাদেশ পিএলসি, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স পিএলসি ও একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলো পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কনফিডেন্স সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১১.২৩ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮৮.৬৮ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৫ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
রংপুর ডেয়ারি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৬১ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬.৯২ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২২ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ৭ ডিসেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
মনোস্পুল বাংলাদেশ: কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৭৬ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৫.০৫ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৩ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২.২১ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.৪৭ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২.০৯ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৪.০৮ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৪ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারনে আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৬০ টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৪.৭৯ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে শেয়ারহোল্ডার নির্ধারণে আগামী ২৩ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
একমি পেস্টিসাইডস: কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ০.০১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (১.১৪) টাকা। আর গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬.৪১ টাকায়। কোম্পানিটির লভ্যাংশসহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্বাচন করা হয়েছে।
এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।
ঢাকা/এনটি/ইভা