Samakal:
2025-07-31@07:19:38 GMT

ভূতের বই নিয়ে ভূতুড়ে কাণ্ড

Published: 25th, April 2025 GMT

ভূতের বই নিয়ে ভূতুড়ে কাণ্ড

একটা ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই চাই আরোহীর। সেটি কিনতে মামার সঙ্গে বইয়ের দোকানে ঢুকলো। দাদার বয়সী দোকানির চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। আরোহীকে দেখেই বললেন, ‘কি বই চাই আমার দাদা ভাইয়ের?’
অবাক কাণ্ড! আরোহীর মনে হলো দোকানি নয়, তার চোখে কচকচে কালো ভূতের মতো দেখতে মোটা ফ্রেমের চশমাটি কথা বলছে। মনে মনে বলল, ‘চশমাটি সত্যি সত্যি ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি দাদা বুঝতে পারলেন। এবার চশমাটি খুলে বললেন, ‘বলো দেখি কী বই চাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, দাদা ভাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের নয়, আমার কাছে টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
টয়ংকর ভূত! সে আবার কী রকম! ভেবে চমকে উঠল আরোহী। বলল, ‘নাহ! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
ওরা পাশের দোকানে প্রবেশ করলো। কাকুর বয়সী সেই দোকানির বিশাল গোঁফ! আরোহীকে দেখে গোঁফ নেড়ে নেড়ে বললেন, ‘বলুন আম্মাজান, কি বই আপনার চাই?’
এবারও একই কাণ্ড! আরোহীর মনে হলো দোকানি নয়, তার গোঁফটা নাচতে নাচতে বলছে, বলুন আম্মাজান, কি বই আপনার চাই? মনে মনে বলল, ‘গোঁফটাও ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি কাকু বুঝতে পারলেন। বুঝতে পেরে মুখের ওপর মাস্ক পরে গোঁফ ঢেকে বললেন, ‘এবার বলেন দেখি আম্মাজান, আপনার কি বই চাই?’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, কাকু?’
‘আলবাৎ আছে! কিন্তু ভয়ংকর ভূতের নয়, টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
আবার টয়ংকর ভূত! আগের মতোই চমকে উঠল আরোহী। বলল, ‘নাহ্! নাহ্! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
ওখান থেকে বেরিয়ে ওরা আরেকটা দোকানে এলো। সেই দোকানে একজন মেয়ে বসে আছে। মেয়েটার নাকে ভারী সুন্দর নাক ফুল। আরোহীকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি বই চাই, আপিটার?'
আরোহী অবাক হয়ে দেখছে মেয়েটার নাকে উজ্জ্বল নীল রঙের নাক ফুল। যেন নাক ফুলটাই জিজ্ঞেস করছে। মনে মনে বললো, ‘নাক ফুলটাও ভূত নাকি?’
আরোহীর মনের কথা দোকানি আপু বুঝতে পারলেন। নিজের হাতের তালুয় নাক ফুলটা লুকিয়ে রেখে বললেন, ‘আমার ছোট্ট আপিটার কি বই চাই বলো তো!’
‘ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, আপু?’
‘আছে! আছে! টয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
সে কী! এখানেও টয়ংকর ভূত! এবার খুব বিরক্ত আরোহী। বললো, ‘নাহ! নাহ্! নাহ্! টয়ংকর ভূতের বই চাই না।’
বাইরে এসে আরোহী মামাকে বললো, ‘এই টয়ংকর ভূতটা আবার কী, মামা?’
মামা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে ভূতের কতো গল্প শুনেছি। টয়ংকর ভূতের কথা আজকে প্রথম শুনলাম। মনে হচ্ছে এখানে কোথাও ভয়ংকর ভূতের বই পাবো না। আমরা বরং একটা টয়ংকর ভূতের গল্পের বই নিয়ে চলে যাই।’
যেই কথা সেই কাজ। ওরা অন্য আরেকটা দোকানে ঢুকলো। দেখে আরোহীর বয়সী একটা ছোট ছেলে বাবু বসে আছে। ওর হাতে কাঠি লজেন্স। লজেন্সের গায়ে আবার কি সব আঁকিবুঁকি। আরোহীকে দেখে বাবু বললো, ‘ভূতের বই-ই তো তোমার চাই, তাই না বন্ধু?’
যাহ্ বাবা! বাবু নয়, বাবুর লজেন্সটা কথা বলছে। তাই মনে হচ্ছে আরোহীর। এবার একটু ভয়ই পেলো সে। মনে মনে বললো, ‘লজেন্সটা ভূত নাকি!’
আরোহীর মনের কথা বাবুও বুঝতে পেরে পুরো লজেন্সটা মুখে পুরে দিল। বিড়বিড় করে বললো, ‘বলো, বন্ধু! কেমন ভূতের বই চাই তোমার?’
‘টয়ংকর ভূতের গল্পের বই। তোমার দোকানে আছে, বন্ধু?’
‘টয়ংকর ভূতের নয়, আমাদের কাছে ভয়ংকর ভূতের গল্পের বই আছে।’
‘এ কী কাণ্ড! ভয়ংকর ভূতের বই চাইলে বলছে টয়ংকর ভূত আছে, টয়ংকর ভূত চাইলে ভয়ংকর দিচ্ছে। এ কোন ভূতুড়ে খপ্পরে পড়লাম! আচ্ছা, বন্ধু! বলতে পারো ভয়ংকর ভূত আর টয়ংকর ভূতের মধ্যে তফাৎ কি?’ আরোহী বললো।
পাশ থেকে বাবুর বাবা আসে। তিনিই দোকানদার। আরোহীকে বুঝিয়ে বললেন, ‘টয়ংকর ভূতেরা দেখতে খুব মিষ্টি হয়। তা সত্ত্বেও ওদের গল্পগুলো কিন্তু ভয়ের, রহস্যঘেরা, অলৌকিক আবার মজারও। পড়তে পড়তে ভয়ও পাবে, মজাও পাবে। বাজারে এমন অনেক টয়ংকর ভূতের বই আছে। চশমা টয়ংকর ভূত, গোঁফ টয়ংকর ভূত, নাক ফুল টয়ংকর ভূত। আমার কাছেও একটা টয়ংকর ভূতের বই থাকতে পারে। দাঁড়াও, খুঁজে দিচ্ছি তোমায়।’
দোকানদারের বুক পকেটে ঠ্যাংঠ্যাঙে লম্বা ভূতের মতো দেখতে একটা কলম। বড় বড় চোখে কলমটার দিকে তাকিয়ে আছে আরোহী। ততক্ষণে একটি বই বের করে দিলেন তিনি। নাম ‘কলম টয়ংকর ভূত।’ বইটা দেখে সাংঘাতিক ভয় পেলো আরোহী, বেশ মজাও লাগছে তার। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর হ ক বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ