সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের
Published: 27th, April 2025 GMT
‘দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। পাশাপাশি অবিলম্বে উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণেরও দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আজ রোববার দুপুরে ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
পাশাপাশি দাবি পূরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ দেশের প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতিতে আগামী ২৯ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ফোরাম। আর দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দকরণ এবং ফ্যাসিবাদের দোসর উচ্চ ও নিম্ন আদালতের দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারকদের অপসারণ দাবিতে’ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায় আমরা অবিলম্বে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণ দাবি করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
দেশে যত গুম ও খুন, যা কিছু হয়েছে, সব কিছুর মূল হোতা হচ্ছেন খায়রুল হক—এ কথা উল্লেখ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘কাজেই তাঁর বিচার অবশ্যই হতে হবে। না হলে জনগণ তাঁর বিচার করবে অবশ্যই। এ লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
২৯ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশ
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের পর কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি বলেন, ‘মূলত যে দাবিটা করছি, গণতন্ত্র হত্যাকারী, দেশের গুম–খুন–হত্যার অন্যতম নায়ক সাবেক প্রধান বিচারপতির (খায়রুল হক) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আইনজীবী সমাজসহ দেশের মানুষ চায়। কারণ, বিচারকের আসনে বসে তিনি যে দেশের প্রতি অবিচার করেছেন, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে আরেকজন খায়রুল হকের জন্ম হয়তো বা হতে পারে। যে কারণে খায়রুল হকের বিচার এমন হওয়া উচিত, যেন ভবিষ্যতে আর নতুন কোনো খায়রুল হক বিচারাঙ্গনে সৃষ্টি না হয়। সেই লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী ফোরামে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হচ্ছে ২৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ সারা দেশের আইনজীবী সমিতিতে বিক্ষোভ কর্মর্সূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনতিবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে প্রত্যাশা করছি। অন্যথায় আইনজীবী ফোরাম আইনজীবী সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।’
লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল। অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। অথচ তাঁর বিচার বাংলাদেশের জনগণের গণদাবি। এ ক্ষেত্রে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগই এখন পর্যন্ত নেয়নি।
‘শেখ হাসিনার মতোই দোষী হচ্ছেন খায়রুল হক’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ফোরামের মহাসচিব আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করছি, আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন না বলে খায়রুল হক সাহেবকে এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। যে কারণে বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন।…শেখ হাসিনার মতোই দোষী হচ্ছেন খায়রুল হক। তাঁর হাত দিয়েই জুডিশিয়াল ক্যুর মাধ্যমে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’
কায়সার কামাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্র হত্যার জন্য যেভাবে দায়ী, ঠিক তেমনিভাবে খায়রুল হক সাহেবও দায়ী। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত তাঁকে আইনের আওতায় আনার কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সহসভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক এম বদরুদ্দোজা বাদল, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’
দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।
তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’
প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে