বগুড়ায় একসঙ্গে জন্ম নিল চার নবজাতক, মা নাম রাখলেন মোহাম্মদ, আহম্মেদ, ওমর ও রহমান
Published: 27th, April 2025 GMT
বগুড়ায় একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার ছেলেসন্তান সুস্থ আছে। আজ রোববার তাদের নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ, আহম্মেদ, ওমর ও রহমান। সৌদিপ্রবাসী বাবা শরিফুল ইসলামের অবর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা জান্নাতি আক্তার সদ্যভূমিষ্ঠ চার সন্তানের এই নাম রাখেন।
প্রথম সন্তান জন্মের আট বছর পর গত শুক্রবার রাতে বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে একসঙ্গে চার নবজাতকের জন্ম দেন জান্নাতি আকতার। তিনি জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাহারপুকুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী শরিফুল ইসলামের স্ত্রী। এ দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে আছে।
সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া চার নবজাতক ও মা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধান টিএমএসএসের উপনির্বাহী পরিচালক মতিউর রহমান। তিনি বলেন, আট বছর পর জান্নাতি দ্বিতীয়বারের মতো গর্ভধারণ করেন। গত শুক্রবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন। প্রসূতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনোয়ারা খাতুন তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। বর্তমানে মা ও চার সন্তান হাসপাতালে নিবিড় তত্ত্বাবধানে আছে।
মা জান্নাতি আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী কয়েক বছর ধরে সৌদিপ্রবাসী। গত বছর তিনি সৌদিতে ওমরাহ করতে যাওয়ার পর স্বামীর সঙ্গে থেকে দেশে ফেরার পর অন্তঃসত্ত্বা হন। শুক্রবার বিকেলে প্রসববেদনা অনুভব করলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে অস্ত্রোপচারের পর চারটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। আজ তাদের নাম রাখেন মোহাম্মদ বিন শরিফুল, আহম্মেদ বিন শরিফুল, ওমর বিন শরিফুল ও রহমান বিন শরিফুল। একসঙ্গে চার ছেলেসন্তান জন্ম নেওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত সৌদিপ্রবাসী বাবা। ভিডিও কলে তিনি ছেলেদের মুখ দেখে আনন্দে আত্মহারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দ প রব স একসঙ গ জন ম ন রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।