সিদ্ধিরগঞ্জে মিশুকসহ চালক অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি : ৪ দিনেও মিলেনি সন্ধান
Published: 27th, April 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিশুকসহ এর চালক আবুল কাশেম (৩৫) কে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অপহৃতের ভাই সালাউদ্দিন (২৮)।
অভিযোগ দায়েরের পর ৪ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো সন্ধান মিলেনি চালক আবুল কাশেমের। এদিকে এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার স্বজনরা। অপহৃত আবুল কাশেম সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিনপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে মিজমিজি দক্ষিনপাড়ার মাসুদ মিয়ার অটোর গ্যারেজ থেকে আবুল কাশেম তাহার মিশুক রিক্সা নিয়ে বাহির হয়। এরপর বাসায় ফেরার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও আবুল কাশেম বাসায় ফিরেনি। পরে আশেপাশের সকল জায়গাসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও তার সন্ধান মিলেনি।
এরই মধ্যে অভিযোগকারী সালাউদ্দিনের ইমু নাম্বারে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অজ্ঞাত নামা এক ব্যাক্তি ফোন করে করে বলে ১ লাখ টাকা মুক্তিপন নিয়া কাঁচপুর ব্রিজ এর নিচে যাওয়ার জন্য। এবং আরও বলে এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ী করলে, কিংবা কোন আইনী ব্যবস্থা নিলে তারা আবুল কাশেম খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে।
এবিষয়ে জানতে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহর মোবাইলে (নং- ০১৭১৭৩৮--৫৬) এ রবিবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ
২০১৯ সালের ৭ মে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদ (৪৬)। এরপর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের দাবি, আবদুল আহাদের মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের মুক্তিপণও দিয়েছিল তারা। তবে ফেরত পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ছয় বছর পর গতকাল বুধবার আহাদের মরদেহ মিলেছে ফেনীতে।
পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুরে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে আহাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা ছিল, আহাদ দিনমজুরের কাজ করেন। তবে তাঁর পকেটে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে আসল পরিচয় পাওয়া যায়। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পুলিশ পরিবারকে খবর দেয়।
নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্র জানায়, আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ভূইগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মো. ইমানি মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি কলেজের প্রভাষক ছিলেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে তিনি প্রথমে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শেষে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি নিখোঁজ হন।
নিহত আহাদের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই চট্টগ্রামে একাই থাকতেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন। ২০১৯ সালের ৭ মে ভোরে তাঁর ভাবিকে মুঠোফোনে জানানো হয় ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীদের তাঁর ভাবি মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকাও দেন। তবে তাঁর ভাইকে ফেরত পাওয়া যায়নি।
নাঈমা নাসরিন দাবি করেন, তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে দলীয় কোনো পদে ছিলেন না। তাঁর ভাইকে কেন অপহরণ করা হয়েছে, কেন গুম করা হয়েছে তাঁরা জানেন না। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
লাশ ফেনীতে কীভাবে এল, জানে না পুলিশ
নিহত আবদুল আহাদের ফেনীর ছাগলনাইয়া কীভাবে এসেছে, তা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি এত দিন আহাদ কোথায় ছিলেন, এর কোনো ব্যাখ্যাও তাঁরা দিতে পারেনি। পুলিশের দাবি, আহাদের শরীরে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কোনো কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের প্রাথমিক ধারণা।
নিহত আহাদের ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের ঘটনার পর তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তবে তাঁর মামার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি চান।
জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম বলেন, নিহত কাস্টম কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে ছয় বছর আগে অপহরণের যে বিষয়টি জানানো হচ্ছে, সে বিষয়ে পুলিশ খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা তাঁরা নেবেন।