পাকিস্তান সংঘাত বাড়ানোর চেষ্টা করলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে: রাজনাথ সিং
Published: 8th, May 2025 GMT
পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, তারা যদি এই পর্যায় থেকে সংঘাত আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
সর্বদলীয় বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাদের জানান, পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ভারতের চালানো অপারেশন সিঁদুরে শতাধিক সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা পিটিআই ও ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানায়, তিনি পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন তারা যদি এই পর্যায় থেকে সংঘাত আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
অপারেশন সিঁদুর একটি ‘চলমান অভিযান’ জানিয়ে বৈঠকে রাজনাথ সিং আরও জানান, ভারত এখন আর নতুন করে কোনো হামলা চালাতে চায় না– কিন্তু পাকিস্তানি সেনা ভারতে আঘাত হানলে অবশ্যই তার জবাব দেওয়া হবে।
বৈঠকের পর প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সাংবাদিকদের বলেন, সরকার যা বলেছেন তা আমরা শুনলাম। তারা এমন কিছু তথ্যও দিয়েছেন যেগুলো গোপনীয় রাখতে হবে। বিরোধীরা জানিয়েছেন আমরা সবাই সরকারের পাশে আছি।
সর্বদলীয় বৈঠক খুব ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে হয়েছে, এ কথা জানিয়ে ভারতের সংসদবিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৈঠকে উপস্থিত সবাই পরিণতিবোধ দেখিয়েছেন, কেউ কোনো দোষারোপের রাস্তায় যাননি।
ভারতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই সামরিক অভিযানের বিষয়ে একটি ‘সার্বিক ঐকমত্য’ গড়ে তুলতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল বলে সরকার জানিয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে উভয় পক্ষে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। ইসলামাবাদ বলেছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং সীমান্তে গোলাগুলিতে পাকিস্তানে ৩১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নয়াদিল্লি বলেছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তাদের দিকে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। কূটনীতিক এবং বিশ্বনেতারা উভয় দেশকে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসতে বলেছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে তা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সূত্র-বিবিসি
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় স্বামীর সহযোগিতায় তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্বামীর সহায়তায় এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানার পর ওই তরুণীর স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে তাঁদের চৌদ্দগ্রামের মিরশ্বানি এলাকা থেকে আটক করা হয়। আজ সকালে ওই তরুণী তাঁর স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করলে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওই তরুণীর স্বামীর (২৬) বাড়ি নোয়াখালীতে। গ্রেপ্তার অপর চারজনও একই এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন বেলাল হোসেন (৩৫), হৃদয় (২৫), মহিন উদ্দিন (২৬) ও আবুল কালাম (৪৫)। তাঁরা সবাই ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই পারিবারিকভাবে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর দুই বছর তিনি স্বামীর বাড়িতে ছিলেন। তবে স্বামীর মাদকাসক্তি ও অসদাচরণের কারণে ছয় মাস আগে তিনি বাবার বাড়ি ফিরে যান। পরে সালিসের মাধ্যমে প্রায় ১০ দিন আগে আবার স্বামীর বাড়িতে ফেরেন ওই তরুণী। ১৫ অক্টোবর তাঁকে শহরে রাখার কথা বলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি ইটভাটায় নিয় আসেন স্বামী। ওই দম্পতিকে থাকার ব্যবস্থা করেন আসামি বেলাল হোসেন। ১৬ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে বেলাল হোসেন ও আবুল কালামকে নিয়ে আসেন তাঁর স্বামী। এরপর স্বামীর সহায়তায় ওই দুজন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এমন ঘটনারও পরও ভয় আর লজ্জায় চুপ ছিলেন তরুণী। ১৮ অক্টোবর মধ্যরাতে একইভাবে স্বামীর সহায়তায় হৃদয় ও মহিন উদ্দিন ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবারও এসে ধর্ষণের চেষ্টা করলে চিৎকার করেন ওই তরুণী। ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করেন স্বামী এবং মুখ খুললে হত্যার হুমকি দেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার তরুণীকে উদ্ধার করেন তাঁর বাবা।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, গতকাল রাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরে রাতেই অভিযান চালিয়ে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজ সকালে থানায় মামলা করেছেন নির্যাতিত তরুণী। পরে সেই মামলায় তাঁর স্বামীসহ পাঁচজনকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে ওসি বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে পাঠানো হবে।