পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, তারা যদি এই পর্যায় থেকে সংঘাত আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।  

সর্বদলীয় বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাদের জানান, পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ভারতের চালানো অপারেশন সিঁদুরে শতাধিক সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছেন। 

প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা পিটিআই ও ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানায়, তিনি পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন তারা যদি এই পর্যায় থেকে সংঘাত আরও বাড়ানোর চেষ্টা করে তাহলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

অপারেশন সিঁদুর একটি ‘চলমান অভিযান’ জানিয়ে বৈঠকে রাজনাথ সিং আরও জানান, ভারত এখন আর নতুন করে কোনো হামলা চালাতে চায় না– কিন্তু পাকিস্তানি সেনা ভারতে আঘাত হানলে অবশ্যই তার জবাব দেওয়া হবে।

বৈঠকের পর প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সাংবাদিকদের বলেন, সরকার যা বলেছেন তা আমরা শুনলাম। তারা এমন কিছু তথ্যও দিয়েছেন যেগুলো গোপনীয় রাখতে হবে। বিরোধীরা জানিয়েছেন আমরা সবাই সরকারের পাশে আছি।

সর্বদলীয় বৈঠক খুব ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে হয়েছে, এ কথা জানিয়ে ভারতের সংসদবিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৈঠকে উপস্থিত সবাই পরিণতিবোধ দেখিয়েছেন, কেউ কোনো দোষারোপের রাস্তায় যাননি।

ভারতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই সামরিক অভিযানের বিষয়ে একটি ‘সার্বিক ঐকমত্য’ গড়ে তুলতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল বলে সরকার জানিয়েছে।

মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে উভয় পক্ষে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। ইসলামাবাদ বলেছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং সীমান্তে গোলাগুলিতে পাকিস্তানে ৩১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নয়াদিল্লি বলেছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তাদের দিকে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। কূটনীতিক এবং বিশ্বনেতারা উভয় দেশকে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসতে বলেছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে তা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সূত্র-বিবিসি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বল ছ ন মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে জনগণ, অংশ নিলেন প্রেসিডেন্টও

ইরানের তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশটির রাজধানীজুড়ে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেখানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।

বিক্ষোভ ‘আমেরিকার আগ্রাসনের জবাব চাই’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’- ইত্যাদি নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ইরানি পতাকা, নিহতদের ছবি এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলি নেতাদের কুশপুতুল। অনেকে হাতে ধরে রেখেছিলেন ব্যানার যাতে লেখা ছিল:

‘আমরা প্রতিরোধ করবো, আত্মসমর্পণ নয়’, ‘হামলা হলে জবাব আসবেই’, ‘পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রক্ত বৃথা যাবে না’

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই হামলা কেবল ইরানের নয়, সমস্ত মুসলিম বিশ্বের ওপর আঘাত। আমেরিকা জানে না, ইরান কখনও মাথানত করে না।’

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিক্ষোভের লাইভ সম্প্রচার করে। অনেক জায়গায় ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত থেকে জনগণকে ‍উদ্বুদ্ধ করেন প্রতিরোধে সক্রিয় থাকতে।

তেহরানের আজাদি স্কয়ার, ফার্দৌসি স্কয়ার, ইমাম হোমেইনি মসজিদের সামনে এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ছিল প্রধান বিক্ষোভস্থল। তবে দেশটির বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো করে বিক্ষোভ হয়। তেহরানের আজাদি স্কয়ারে আসেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশ নেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভগুলো শুধু সরকার সমর্থিত নয়—বিশেষ করে ইরানে পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের ওপর হামলার পর সাধারণ জনগণের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ও ক্ষোভ উভয়ই দৃশ্যমান।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এর পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ