হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত: রণধীর জয়সওয়াল
Published: 26th, November 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের দেওয়া চিঠি পরীক্ষা করে দেখছে ভারত। আজ বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ‘চলমান বিচারিক ও অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অনুরোধটি (চিঠি) পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আমরা শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা অব্যাহতভাবে সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’
নয়াদিল্লিকে দেওয়া চিঠির বিষয়ে আজ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
কোন প্রক্রিয়ায় ভারতে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নোট ভারবাল (কূটনৈতিক পত্র) আমাদের মিশনের মাধ্যমে ওদের (ভারতের) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কোনো উত্তর আসেনি। এত তাড়াতাড়ি উত্তর আশাও করি না আমরা।’
গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ দুই দফায় চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি ভারত। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ওই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এরপর শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিতে বলা হয়, বিস্তারিত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে আবার অনুরোধ জানাচ্ছে।
এই চিঠির কোনো জবাব নয়াদিল্লি না দিলেও শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণার পর একটি বিবৃতি দিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছিল, ‘নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’
আরও পড়ুনশেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে লেখা চিঠির জবাব এখনো আসেনি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেই দেশে শান্তি লঙ্ঘিত হবে: সুলতানা কামাল
বেসরকারি সংগঠন ‘আমরাই পারি’র চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘বাংলাদেশ হবে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার দেশ। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেই দেশে শান্তি লঙ্ঘিত হবে। সরকারের দায়িত্ব মানুষ যেন মাথা উঁচু করে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করা। যে সরকার সেটা করে সেই সরকার সু-সরকার আর যে সরকার করে না সে সরকারকে আমরা প্রশংসা করব না, সেই সরকারের আমরা সমালোচনা করব।’
আজ সোমবার দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘সমতল আদিবাসী সম্মেলন-২০২৫’–এ সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
দেশের মালিক জনগণ উল্লেখ করে সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, ‘সরকার হচ্ছে সেই জনগণের সেবক। জনগণের হেফাজতের জন্য আমরা সেখানে নিযুক্ত করেছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরাই সরকার নির্বাচিত করব। আর যাঁরা নির্বাচিত হতে চান, আমরা কিন্তু তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলি না—ভাই, আপনি নির্বাচিত হন। তাঁরাই আমাদের এসে বলেন—ভাই, আমাদের নির্বাচিত করেন, সেবা করার সুযোগ দেন। যেহেতু সেবা করার সুযোগটা তাঁরা চেয়ে নেন, সুতরাং নির্বাচিত হয়ে সদ্ব্যবহার করেন কি না সচেতন নাগরিক হিসেবে সেটা দেখার দায়িত্বটা আমাদেরই।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষই একেকজন মানবাধিকারকর্মী। আমি সামনে আছি বলেই আমার নামটা হয়ে গেছে মানবাধিকারকর্মী। কিন্তু প্রত্যেক মানুষ তার নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন, তার অধিকার রক্ষা করতে পারে এবং অন্যের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তার জন্য প্রতিবাদ করতে পারে। এটিই মানবিক অধিকার, মানবিক দায়িত্ব ও নৈতিক দায়িত্ব।’
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের প্রধান নির্বাহী জিন্নাত আরা হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নীলা হাফিয়া, পিকেএসএসের নির্বাহী পরিচালক ডেইজি আহমেদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা আশিক চন্দ্র বানিয়াজ, আদিবাসী কমিউনিটি সদস্য লাবনী এক্কা, মাধবী রাণী প্রমুখ।