নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) খেলা স্থগিত হওয়ার পর দেশে ফিরলেন রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। দেশে ফিরেই গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আজ মুখ খুললেন জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে গিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পড়ে যান তিনি ও পেসার নাহিদ রানা।
বিমানবন্দরে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে রিশাদ বলেন, ‘আসলে প্রথম যে পরিস্থিতি আমরা দেখেছি, শুনতে পেয়েছি, শোনার পর একটু আতঙ্কিত হয়েছিলাম সবাই, ভয় কাজ করছিল। সবাই সাপোর্ট করছিল দেশ থেকে, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকেও। বিসিবি থেকেও অনেক খোঁজখবর নিয়েছে।’
রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা প্রথমবার দেশের বাইরে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে পাকিস্তান গিয়েছিলেন। পাকিস্তান সুপার লিগে রিশাদের অভিষেক হলেও নাহিদকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল। পিএসএলের শুরু থেকে থাকায় রিশাদ ৫টি ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন লাহোর কালান্দার্সের জার্সিতে। নাহিদ সিলেটে টেস্ট খেলে মাঝপথে যোগ দেন। খেলার সুযোগ পাননি। তার দল ছিল পেশোয়ার জালমি।
কয়েকদিন ধরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে হামলা হয় রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের পাশেও। এ ঘটনার পর পিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পিএসএল খেলতে যাওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররা দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানান। এরপরই পিএসএল স্থগিতের ঘোষণা আসে। পাকিস্তান থেকে বিশেষ বিমানে দুবাইয়ে আনা হয় বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারকে, সেখান থেকে আজ বিকেলে ঢাকায় পৌঁছান নাহিদ রানা ও রিশাদ।
রিশাদ জানান, বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন। 'আমরা খুব আতঙ্কিত ছিলাম। পরিবারের সবাই খুব চিন্তায় ছিল। বিদেশি অনেকেই নার্ভাস হয়ে পড়েছিল', যোগ করেন রিশাদ।
সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি আসে পাকিস্তান ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই। রিশাদ জানান, 'আমরা উড়ার ২০ মিনিট পরেই পাকিস্তানের বিমানবন্দরে মিসাইল হামলা হয়। খবরটা শুনে আমরা সবাই শকড হয়ে যাই।'
সফলভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) ধন্যবাদ জানিয়েছেন রিশাদ। দেশবাসীর দোয়া ও সহমর্মিতার জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এর ফলে স্থগিত হয়ে যাওয়া পিএসএল পুনরায় মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আয়োজকরা টুর্নামেন্টটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নিতে চাইলে ফের লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলতে আগ্রহী রিশাদ। তিনি বলেন, 'পিএসএল যদি দুবাইয়ে শিফট হয়, তাহলে আবারও খেলতে যাওয়ার চেষ্টা করব।'
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিমানবন্দরে তিন রাত আটকে থাকার পর দলের সঙ্গে রিশাদ-নাহিদ
ইমিগ্রেশন জটিলতায় টানা তিন রাত দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে থাকার পর অবশেষে জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। সব জটিলতা কাটিয়ে আজ থেকেই মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত এই দুই তরুণ ক্রিকেটার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গত বুধবার প্রথম বহরের সঙ্গে দেশ ছাড়েন রিশাদ ও নাহিদ। তবে দুবাইয়ে পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন পেরিয়ে বিমানবন্দর ছাড়লেও অন্য সদস্যরা, আটকে দেওয়া হয় রিশাদ ও নাহিদকে।
বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার আহমেদ মিঠু গণমাধ্যমকে জানান, ‘দলের বাকি সদস্যরা ইমিগ্রেশন পেরিয়ে বের হয়ে গেলেও, রিশাদ ও নাহিদকে আটকানো হয় এবং পরে তাদের ওপরের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি কিছু সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগও সম্ভব হয়নি। অথচ তাদের ভিসা ঠিকঠাক করেই পাঠানো হয়েছিল।’
পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড ও দুবাইয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি। শুক্রবার মধ্যরাতের পর অবশেষে দলের সঙ্গে যোগ দেন রিশাদ ও নাহিদ। তাদের ছাড়াই বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল।
ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) শেষ করে পাকিস্তান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার সময় তাদের ভ্রমণ-সংক্রান্ত কোনো জটিলতা থেকেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। পিএসএল আকস্মিকভাবে স্থগিত হওয়ার পর অনেক বিদেশি খেলোয়াড়ের মতো রিশাদ ও নাহিদও বিশেষ ব্যবস্থায় আমিরাতে যান। সেই ব্যবস্থার কোনো ভুলেই হয়তো এবার বিমানবন্দরে বাধা পেতে হয়েছে তাদের।
আজ (শনিবার) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও আমিরাতের মধ্যকার দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিরিজের প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে সোমবার, একই মাঠে এবং একই সময়ে।