শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আজ রোববার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বিজয় বইমেলার পরিবেশ গ্রন্থানুরাগীদের সমাগমে মুখর হয়ে ছিল। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবন ও অবদান এবং স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসভিত্তিক বইয়ের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ ছিল লক্ষণীয়।

আজ ছিল ১৩ দিনব্যাপী মেলার পঞ্চম দিন। ১০ ডিসেম্বর থেকে বিজয় বইমেলা শুরু হয়েছে। চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মেলার বিভিন্ন স্টলে ঘুরে পাঠকেরা ইতিহাসভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বই সংগ্রহ করেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ মেলার মাঠে পাঠক উপস্থিতি কিছুটা বেশি ছিল। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বই বিক্রিতেও। প্রকাশকেরা জানান, আজ বই বিক্রি সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

বিজয় বইমেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমি চত্বরসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অনেক ব্যানার ও প্রচারসামগ্রী স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেলার প্রচার আরও বিস্তৃত করতে পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের জন্য বিশেষ ডিজিটাল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজয় বইমেলায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করেন জলতরঙ্গের শিল্পীরা। রোববার সন্ধ্যায় নজরুল মঞ্চে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ