টানা চার দিন ধরে তাপপ্রবাহ বইছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। শুরু হয়েছিল বুধবার। দিন দিন এর পরিধি বেড়েছে। শুক্রবার দেশের ৪৫ জেলায় বয়ে গিয়েছিল তাপপ্রবাহ। আজ শনিবার এ তাপ ছড়িয়ে পড়ে দেশের ৬২ জেলায়। আগের দিনের চেয়ে গতকাল বেড়েছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের এলাকাও।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, আগামীকাল রোববারও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে সেই সঙ্গে দুই বিভাগে সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলেছে আবহাওয়া অফিস। তাতে তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এদিকে টানা এই তাপপ্রবাহে বেড়ে গেছে ডায়রিয়াসহ নানা অসুখ। শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে গরমের কারণে জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ বেড়ে গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এখন যে অবস্থা, তাতে ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। গরমের এ সময়ে তাঁদের যত্নে নজর দিতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ বাদ দিয়ে আজ দেশের ৬২টি জেলায় মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এর মধ্যে আজ চুয়াডাঙ্গায় এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ জেলায় টানা তৃতীয় দিনের মতো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গতকাল। কয়েক দিনের মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহের পর আজ চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা চারদিকে, কোথাও স্বস্তি নেই। আগামীকাল এ জেলায় তাপমাত্রা খানিকটা বাড়তে পারে—এমনটাই পূর্বাভাস আবহাওয়া অফিসের।

রোদে-গরমে ঘেমে-নেয়ে একাকার। এরই মধ্যে ধান শোকানো ,বস্তা বন্দী ও গুদামে ভর্তির কাজে ব্যস্ত কয়েকজন শ্রমিক। কাজের ফাঁকে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন শ্রমিক সর্দ্দার মিরাজুল ইসলাম। সদর উপজেলার হাতিকাটা এলাকা। ১০ মে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ 

সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ছাত্রী। তাদের অভিযোগ, ক্লাসে অশালীন কথা বলা এবং ফেসবুকে আপত্তিকর বার্তা পাঠাতেন ওই শিক্ষক। 

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।

আরো পড়ুন:

অবরোধ তুলে নেওয়ার খবর, তবে সড়কে আছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা

পাবিপ্রবির মানবিক অনুষদের ডিন হলেন হুমায়ূন কবীর

ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে করা অভিযোগ করা হয়েছে, প্রভাষক লিমন হোসেন বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করছেন। তিনি তার কক্ষে ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। অনেক সময় তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন বার্তা পাঠান। যেমন, তার স্ত্রী তাকে সুখী করতে পারেন না। তিনি যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক একাকিত্বে ভোগেন। এছাড়াও অনেক আপত্তিকর কথা, যা প্রকাশ করার মতো নয়।

অপর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। সেখানে কয়েকটি অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, শিক্ষক লিমন হোসেন ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ক্লাসে পড়ানোর ছলে তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয় সকলের সামনে উপস্থাপন করে তাদের হেয় করেন। 

অভিযোগ করা হয়, একজন শিক্ষক হিসেবে লিমন হোসেনের পড়ানোর পদ্ধতি কোনোভাবেই গবেষণা কেন্দ্রিক নয়।  তিনি গলাদ্ধকরণ পদ্ধতিতে বিশ্বাস করেন। যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধাকে বিনষ্ট করে। এছাড়া লিমন হোসেন স্বজনপ্রীতি নীতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেন, যা পরবর্তীতে বড় অপরাধের জন্ম দেয়।

বিগত দিনে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত চক্রের সঙ্গে, এমনকি সম্প্রতি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও প্রভাষক লিমন হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং প্রকাশ্যে তাদের মদদ দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। 

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসের একটি মিলনায়তনে শিক্ষার্থীরা লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে তারা দ্রুত লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান। 

একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘উনি (লিমন হোসেন) মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী। যা আমাদের বিব্রত করে। এমনকি, নিজের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম-বিচ্ছেদের গল্পও বারবার বলে বিব্রত করতে থাকেন। কে কার সঙ্গে মিশবে, না মিশবে— সে ব্যাপারেও তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করেন।’’  

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক লিমন হোসেন বলেন, ‘‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’  

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর বলেন, ‘‘উপাচার্যের কাছে দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই।’’ 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

ঢাকা/সাব্বির/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ