এনবিআর ও আইআরডি বিলুপ্ত করে হচ্ছে দুটি বিভাগ, কী হবে তাদের কাজ
Published: 13th, May 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে নতুন দুটি বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত রাতে এ–সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশে নতুন দুই বিভাগের কার্যপরিধি কী হবে, তা–ও উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজস্ব নীতি বিভাগ কী কী করবে
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ নামে নতুন যে বিভাগ গঠিত হবে, সেটির কাজ হবে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় রাজস্ব জোগানে সম্প্রসারণমূলক কর ভিত্তি, যৌক্তিক করহার, সীমিত কর অব্যাহতি নীতি অনুসরণ করে উত্তম কর ব্যবস্থা তৈরি করা। এ ছাড়া স্ট্যাম্প আইনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন নতুনভাবে প্রণয়ন বা সংশোধন করা, স্ট্যাম্প ডিউটি , আয়কর, ভ্রমণ কর, দান কর, সম্পদ কর, কাস্টমস শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, সারচার্জ ও অন্যান্য শুল্ক-কর, ফি আরোপ, হ্রাস-বৃদ্ধি ও অব্যাহতি প্রদান–সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে এই বিভাগ। পাশাপাশি কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতির মূল্যায়ন; কাস্টমস–সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন ও মতামত প্রদান; আন্তর্জাতিক দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি–সংক্রান্ত কার্যক্রম; রাজস্ব–সংক্রান্ত তথ্য–উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ ও গবেষণার মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের যথাযথ প্রক্ষেপণ ও প্রাক্কলন করা; রাজস্ব নীতি–সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান, প্রজ্ঞাপন, এসআরও প্রণয়ন, সংশোধন ও ব্যাখ্যা প্রদান করবে এই বিভাগ।
এই বিভাগের জনবল সম্পর্কে বলা হয়েছে, আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, কাস্টমস, অর্থনীতি, ব্যবসা প্রশাসন, গবেষণা ও পরিসংখ্যান, প্রশাসন, নিরীক্ষা ও হিসাব এবং আইনসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞদের দিয়ে বিভাগটির বিভিন্ন পদ পূরণ করা হবে। আর সরকার উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো সরকারি কর্মকর্তাকে রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে বলে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনএনবিআর বিলুপ্ত, গঠিত হচ্ছে দুই সংস্থা ২ ঘণ্টা আগেএ বিভাগকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য অর্থনীতিবিদ, রাজস্ববিশেষজ্ঞ, আইনবিশেষজ্ঞ, হিসাব ও নিরীক্ষাবিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী সংগঠন, পেশাজীবী প্রতিনিধি, ট্যারিফ কমিশনমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিত্বে একটি পরামর্শক কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে অধ্যাদেশে।
রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ কী কী করবে
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন নতুন এ বিভাগ গঠিত হবে। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, এ বিভাগের কাজের মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির যথাযথ প্রয়োগ; কাস্টমস–সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন; আন্তর্জাতিক দ্বৈত কর পরিহারসংক্রান্ত চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন; কর ভিত্তি সম্প্রসারণে করসেবা, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি জোরদার করা এবং সবাইকে করজালের মধ্যে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ; রাজস্ব ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত পদ্ধতি প্রণয়ন; রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন–সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে রাজস্ব নীতি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় সাধন, দক্ষ জনবল কাঠামো গড়ে তোলা এবং নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর এনবিআরের বিদ্যমান জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে। তবে এসব জনবল হতে প্রয়োজনীয় জনবল রাজস্ব নীতি বিভাগেও পদায়ন করা যাবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসে পদ বৃদ্ধিসহ ৮ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
৪৪তম বিসিএসে পদসংখ্যা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৪৪তম বিসিএসের প্রার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ৪৪তম বিসিএসের প্রার্থীদের জানানো দাবিগুলো হলো ৪৪তম বিসিএসে পদসংখ্যা বৃদ্ধি, চূড়ান্ত ফলাফলের সঙ্গে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভার (মৌখিক পরীক্ষা) নম্বর প্রকাশ, চূড়ান্ত ফলাফল প্রদানের আগে ক্যাডার পছন্দের সংশোধনের সুযোগদান, একই ক্যাডারে একই ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার সুপারিশ না করা, নন-ক্যাডার বিধিমালা-২০২৩ বাতিল বা সংশোধন–পূর্বক ভাইভায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীকে চাকরি প্রদান এবং যেসব প্রার্থীর স্নাতকে পঠিত বিষয়ের বিষয় কোড নেই, তাঁদেরও সংগতিপূর্ণ নন-ক্যাডার পদে আবেদনের সুযোগ প্রদান করা।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুস্তাকিন আহমেদ আশিক বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মূল উপলক্ষ ছিল কোটা। এ জন্য আমরা এই বিসিএসের প্রত্যেক প্রার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থানের পরে আমাদেরই এখন ইতিহাসের সবচেয়ে কম পদ দেওয়া হচ্ছে। এটা কি যৌক্তিক?’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিরাজুস সালেহীন সিয়ন বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষার উদ্দেশ্য সুদক্ষ ও চৌকস অফিসার নিয়োগ করা। বিগত বিসিএসগুলোর সার্কুলারে উল্লিখিত পদের চেয়ে বেশিসংখ্যক পদে সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ৪৪তম বিসিএসে এই বেকারবান্ধব প্রথার ব্যত্যয় ঘটতে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং আগের বিসিএসগুলোর মতো পদ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানাই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজা এ কে আজাদ বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক শূন্যপদ আছে। এ পদগুলোতে জনবল নিয়োগের অভাবে জনগণ ঠিকমতো সেবা পাচ্ছে না। একই সেবা পাওয়ার জন্য বারবার জনগণকে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরতে হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনে জনবলের অভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্য অর্থনীতি বহুমুখীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে ৪৪তম বিসিএসে ১ হাজার ৩০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় উত্তীর্ণ হওয়া দক্ষ জনবল প্রস্তুত আছে ১০ হাজারের বেশি। এ জনবলের সবাইকে সরকার যথাস্থানে নিয়োগ দিলে জনগণেরও উপকার হয়, আমাদেরও কর্মসংস্থান হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে ৪৪তম বিসিএসের কয়েকজন প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।