বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী থেকে কাতারের সশস্ত্র বাহিনীতে প্রেষণে জনবল নিয়োগ–সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আজ রোববার কাতারের দোহায় এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এবং কাতারের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (পাইলট) জাসিম বিন মোহাম্মদ আল মান্নাই এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হজরত আলী খান, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য ও দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কাতারের সশস্ত্র বাহিনীতে প্রেষণে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ পাবেন। ফলে প্রাথমিকভাবে আনুমানিক ৮০০ জনকে কাতারে পাঠানো হবে এবং ভবিষ্যতে এ জনবলের সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর যেসব সদস্যকে কাতারে পাঠানো হবে, তাঁরা প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। তাঁদের কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক হওয়া সাপেক্ষে নিয়োগের মেয়াদ ছয় বছর পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে।

এ চুক্তির ফলে কাতারের সশস্ত্র বাহিনীতে দক্ষ জনবল পাঠানোর নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো উল্লেখ করে প্রেস উইং বলেছে, এতে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সদস্যরা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন এবং বাংলাদেশ সরকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সমর্থ হবে।

প্রেস উইং জানিয়েছে, কাতারে এই সফরকালে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার কাতার সরকার, সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সামরিক শিল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন।

উল্লেখ্য, গত ২১-২৫ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘আর্থনা’ সম্মেলন উপলক্ষে কাতার সফর করেন। সে সময় তিনি কাতার সরকারের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টার সেই সফর ও ফলপ্রসূ কূটনীতির ফলে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও কাতার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর ত্বরান্বিত হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র র সশস ত র ব হ ন ত সশস ত র ব হ ন র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জনবল, অবকাঠামো ও অর্থসংকটে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন

ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিএমআর) চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষার এই বিশেষায়িত শাখাটি জনবল, অবকাঠামো ও অর্থসংকটে ভুগছে। এ বিষয়ে চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতাও কম। সমস্যা ঘোচাতে নীতিনির্ধারক ও চিকিৎসাবিশেষজ্ঞদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সমন্বিত পুনর্বাসনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা’।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, যাঁরা প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকেন, তাঁদের সক্ষম ও সক্রিয় জীবন ফিরিয়ে দেওয়াই পিএমআরের কাজ। চিকিৎসাশিক্ষা ও চিকিৎসাসেবার এই বিশেষায়িত শাখাটিকে অবনমিত করার চেষ্টা অনেকে করছেন। সবাই মিলে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এর স্বাতন্ত্র্য ও উৎকর্ষ বজায় রাখতে হবে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের অনেক শাখাই রোগ সারায়। কিন্তু এই শাখা রোগীকে আবার সক্ষম করে তোলে। রোগীকে নিজের জীবনে, কাজে ও সমাজে ফিরিয়ে দেয়। সেটি শুধু শারীরিক অগ্রগতি নয়, এটি মানুষের অস্তিত্ব পুনরুদ্ধার। এটাই চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই শাখার মানবিক শক্তি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক এম এম জামান। তিনি বলেন, পিএমআরের জন্য দেশে অবকাঠামোর ঘাটতি আছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই শাখা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা কম, এমনকি চিকিৎসকদের মধ্যেও ধোঁয়াশা আছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলের ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, পুনর্বাসন চিকিৎসার জন্য অর্থায়ন বাড়াতে হবে, চিকিৎসক ও চিকিৎসকদের সহযোগী জনবল বাড়াতে হবে এবং এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম বিস্তৃত করতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশে ক্রীড়াবিজ্ঞান ও ক্রীড়াচিকিৎসার চর্চা কম। এটি বাড়াতে হবে। চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা হাজার হাজার রান করেন, সেই হিসাব কেউ রাখে না। আপনাদের করা স্কোর দেখা যায় না।’

চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই বিশেষ শাখার গুরুত্ব তুলে ধরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, যিনি কথা বলতে পারেন না, তিনি জানেন কথা বলার প্রয়োজন কী। যিনি হাঁটতে অক্ষম, তিনি হাঁটার মর্ম অনুভব করেন। কথা বলাতে, হাঁটাতে সক্ষম করে তোলে পিএমআর।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকদের জ্ঞানের প্রতি, রোগীর প্রতি আগ্রহ থাকা জরুরি। জ্ঞান ও রোগী হচ্ছে চিকিৎসকদের পাথেয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের মহাসচিব এ কে আজাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মী নেবে বেসরকারি ব্যাংক, স্নাতকে আবেদন
  • জনবল, অবকাঠামো ও অর্থসংকটে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন