বন্দরে মেয়ে ও জামাতার মারধরে বৃদ্ধ নিহত, আটক ১
Published: 20th, May 2025 GMT
বন্দরে পারিবারিক কলহের জেরে নাসির উদ্দিন দাদন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে মারধরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাতা চঞ্চল মিয়া কে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে বন্দর উপজেলার দক্ষিণ কলাবাগ খালপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির উদ্দিন ওই এলাকার মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, অনেক বছর আগে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নাসির উদ্দিন দাদন রমিজা বেগমকে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার সময় আনোয়ারা নামে এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
সেই সঙ্গে দ্বিতীয় সংসারে পালিত কন্যা হিসেবে ঝিনুক বেড়ে উঠে। তবে সম্প্রতি নাসির উদ্দিন দাদনের সংসারের কর্তৃত্ব ছিল পালিত কন্যা ঝিনুকের কাছে।
এ নিয়ে আনোয়ারা ও তার জামাতার সাথে তাদের বিরোধ তৈরি হয়। সংসারে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এর জের ধরে আজ দুপুরে নাসির উদ্দিনের প্রথম সংসারের মেয়ে আনোয়ারা ও তার স্বামী চঞ্চল তাকে কিল-ঘুষি মারে।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এদিকে মেয়ের জামাতা চঞ্চল মিয়াকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
নিহতের পালিত কন্যা ঝিনুক বলেন, সোমবার বাড়ির পাশের সড়কে থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে তারা আমাকে গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। এর জের ধরে আজ দুপুরে রেললাইন এলাকা দিয়ে রিকশা যোগে যাওয়ার সময় আমার বাবাকে মারধর করে আমার সৎ বোন ও তার জামাতা। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে মেয়ে ও মেয়ের জামাতা বৃদ্ধকে কিল ঘুষি মারে।
এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাতাকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙল ভারতের আত্রাই নদীর বাঁধ, প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে
মাত্র চার মাস আগে নির্মিত পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের আত্রাই নদীর বাঁধ আবারও ভেঙে পড়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সকালে পানির চাপে ভেঙে যায় আত্রাই ড্যামের ভারতীয় অংশ।
উত্তরের আত্রাই নদী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে আবার বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে। ভারতের অভিযোগ, নদীতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাবার ড্যাম দেওয়ার কারণে ভারতীয় অংশ বারবার বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত বছর থেকে আত্রাই নদীতে ছোট আকারে বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু করে ভারত। কিন্তু বাঁধের কাজ চলাকালীন গত ফেব্রুয়ারিতেই বন্যার পানির চাপে ড্যাম ভেঙে যায়। সেই ঘটনার পর থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরেশোরে চলছিল মেরামতের কাজ। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ওই মেরামত অংশ ফের ভেঙে পড়ায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে আত্রাই নদীর পানির স্তর বেড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এভাবে পানি বাড়লে ড্যামের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে। এতে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো তলিয়ে যাবে। নদীটি যেহেতু ভারত হয়ে বাংলাদেশে আবারও প্রবেশ করেছে, সেক্ষেত্রে নদীতে হঠাৎ পানি প্রবাহ বাড়ায় বাংলাদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে এক বছর আগে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মিত এই বাঁধ বর্ষার শুরুতেই ভেঙে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। ঘটনার পরই ড্যামটি পরিদর্শনে আসেন দক্ষিণ দিনাজপুরের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
ড্যাম নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘বাড়ি তৈরির টিএমটি রড ব্যবহার করে ড্যাম তৈরি হয়েছে। এটি চরম দুর্নীতির ফল। আমি চাই প্রশাসনিক স্তরে এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত হোক। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, ‘ড্যাম নির্মাণে প্রচুর টাকা নেতাদের ঘুষ হিসেবে দেওয়া হয়েছে, যার ফলেই আজ এই বিপর্যয়।’
অন্যদিকে বালুরঘাট মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান অশোক মিত্র এই ভাঙনকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘এই ভাঙনের পেছনে কোনো মানুষের হাত নেই। দুর্নীতির অভিযোগ তোলার আগে বিজেপিকে নিজের ঘরে নজর দিতে হবে। বালুরঘাট রেলস্টেশনে তৃতীয় শ্রেণির লিড ব্যবহার করে যে কাজ হচ্ছে, সেটি কি দুর্নীতি নয়?’
তিনি আরও বলেন, ‘রাম মন্দির তৈরির পরই ছাদ থেকে জল পড়ছে—এটাও তো দুর্নীতি। সেখানেও তো বিজেপি চোখ বুজে আছে।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি মন্তব্যের মাঝে চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন আত্রাই নদী পারের গ্রামবাসীরা। ড্যামের দ্রুত সংস্কার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না মেলায় ক্ষোভও বাড়ছে জনমনে।