আম পাড়তে বাধা, দুর্বৃত্তদের গুলি, পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর
Published: 20th, May 2025 GMT
ছবি: সংগৃহীত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দুপক্ষের সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ছাত্রদল নেতা নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সোহরাব মিয়া নামে ছাত্রদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহরাব মিয়ার (২৮) বাড়ি চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামে। তিনি চাতলপাড়া ইউনিয়নের কাঠালকান্দি ওয়ার্ড (৯ নম্বর) ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয়, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের উল্টা গোষ্ঠী ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। উল্টা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আছেন চাতলপাড় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন। মোল্লা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আছেন ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আল আমিন। ৫ আগস্টের পর দলসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজারের কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরও তীব্র হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন চাতলপাড় বাজারে রামদা, ছুরি, টেঁটা, বল্লম, লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে মোল্লা গোষ্ঠীর সোহরাব নিহত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে উল্টা গোষ্ঠীর পাঁচটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সোহরাবের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উল্টা গোষ্ঠীর লালারপুট গ্রামের একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নেয়ামুল মিয়া (৪০), বাবুল মিয়া (৪৩) ও সুরাফ মিয়াকে (৫০) কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত অন্যদের কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই গোষ্ঠীর লোকজনই বিএনপি ও এর অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের। তিনি জানান, সোহরাবের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন চাতলপাড় বাজারের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী।
মোল্লা গোষ্ঠীর পক্ষের মোতাহার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার দুপুরে অতর্কিত তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তাঁদের গোষ্ঠীর সোহরাব টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
উল্টা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে থাকা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিন মাস আগেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সমীর চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, দুটি গোষ্ঠীতেই বিএনপি-যুবদলের নেতা–কর্মী রয়েছে। তবে দলীয় কোনো বিষয়ে সংঘর্ষ হয়নি। ছাত্রদলের নেতা নিহত হয়েছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে।