সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেছেন, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজের যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করেন। পর্যবেক্ষণ–নির্দেশনাসহ এ আদেশ দেওয়া হয়। আদেশের পর রিট আবেদনকারীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুনইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা নেই: আইনজীবী কায়সার কামাল১ ঘণ্টা আগে

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। এতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হবে। রোববারের মধ্যে আপিল বিভাগে আবেদন করার চেষ্টা থাকবে।’

ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের মো.

মামুনুর রশিদ নামের আইনজীবী ১৩ মে রিটটি করেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।

নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক। তিনি বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য।

আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র ঘোষণা নিয়ে রিট খারিজের খবরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস-মিছিল২ ঘণ্টা আগে

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে ইশরাকের করা নির্বাচনী মামলায় চলতি বছরের ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তাপসকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করা হয়। ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করা হয়।

আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির পরও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ইশরাকের সমর্থকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।

আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ৩ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইশর ক র আইনজ ব বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে না পাঠাতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ 

হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থায়ীভাবে স্থাপনে ঐকমত্য কমিশন যে উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আইনজীবীরা। 

সোমবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী ভবনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। সমাবেশ থেকে হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তর না করার দাবি জানানো হয়। প্রয়োজনে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। 

বিক্ষোভে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তর করতে গিয়ে জুডিশিয়ারিকে দুর্বল করলে এর খারাপ কিছু আর হবে না। হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আইনজীবীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। বিচার বিভাগকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র। আইনজীবীরা এ ধরনের কোনো উদ্যোগ মেনে নেবে না। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান, মাহবুবুর রহমান খান, মাকসুদ উল্লাহ, ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম সৈকত, আশরাফ রহমান, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী। 

এদিকে হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের উদ্যোগ না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। গতকাল সোমবার আবেদনটি হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের (বিচার) কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী সাইফুল ইসলাম সাইফ।

তিনি বলেন, সম্প্রতি হাইকোর্ট ডিভিশনের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তরের সম্ভাবনার কথা আলোচনায় এসেছে। তিনি আবেদনে লিখেছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন। তাই তিনি এ বিষয়ে তার মতামত ও আপত্তি সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছেন। আবেদনে এই আইনজীবী পাঁচটি যুক্তি উল্লেখ করে লিখেছেন, সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মূল আসন রাজধানী ঢাকায় থাকবে। হাইকোর্ট ডিভিশনের সেশন অন্যত্র বসানো গেলেও সেটি অস্থায়ী। এর স্থায়ী স্থানান্তর সাংবিধানিক চেতনার পরিপন্থী।

দ্বিতীয় যুক্তি, বিভিন্ন বিভাগে আলাদা বেঞ্চ স্থাপন করা হলে একমুখী আইনপ্রয়োগে ভিন্নতা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। এটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এককতা ও নীতিনির্ধারণের ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তৃতীয় যুক্তি, বিভাগীয় শহরে বিচারপতি, স্টাফ, অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য ও জটিল। এতে রাষ্ট্রের অর্থ, সময় ও দক্ষতার অপচয় হবে। চতুর্থ যুক্তি, স্থানীয় প্রভাব, সামাজিক চাপ ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিচারকার্যে প্রভাব ফেলতে পারে। এটি হাইকোর্টের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস করতে পারে। পঞ্চম ও শেষ যুক্তি, ঢাকায় হাইকোর্টের মামলার সংখ্যা অনেক বেশি। বিচারপতিদের বিভাগে পাঠানো হলে ঢাকায় বিচারিক জট আরও বেড়ে যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিতর্কিত’ বিচারকদের অপসারণ চায় সুপ্রিমকোর্ট বার
  • আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  • চার রোহিঙ্গা খুনের মামলায় আরসাপ্রধান আতাউল্লাহ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  • বিচারকরাও চান খবরের শিরোনাম হয়ে অবদান রাখতে: অ্যাটর্নি জেনারেল 
  • ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ অশ্লীলতার অভিযোগ, নির্মাতা-শিল্পীদের আইনি নোটিশ
  • ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ অশ্লীলতার অভিযোগ, নির্মাতা-শিল্পীদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ
  • ফারুক খানের চিকিৎসার বিষয়ে আদেশ কাল
  • জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়ার ৫ বছর পর মুক্তি পেলেন খুবির দুই
  • আইনজীবী পরিবর্তনে ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির অবসান চান আইন উপদেষ্টা
  • হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে না পাঠাতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ