ঝিনাইদহে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৫
Published: 24th, May 2025 GMT
দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ভৈরবা বাজারে সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বিকাল ৫টার দিকে ভৈরবা বাজারে নিজ কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন। নেতাকর্মীসহ তিনি ভৈরবা তেল পাম্প এলাকায় পৌঁছলে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোজানুর রহমান সোজার অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ালে ভৈরবা বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাজারের দোকানি ও ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
আরো পড়ুন:
পদ্মার বালুমহাল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৬
আম পাড়া নিয়ে নাটোরে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গুলি
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোজানুর রহমান বলেন, ‘‘আমার সমর্থকরা ভৈরবা বাজারে পুর্বনির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার গ্রুপের ৭/৮ জন আহত হয়।’’
পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৯ জনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আহতদের মধ্যে মোস্তফা, শরীফুল, আসাদুজ্জামান ও হাসানুজ্জামানের অবস্থা গুরুতর। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘‘আমি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ভৈরবা বাজারে আমার কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় সোজানুরের নেতৃত্বে তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।’’
মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান জানান, সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসার জন্য মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
ঢাকা/সোহাগ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত র রহম ন জ ব এনপ র স আহতদ র স ঘর ষ এ সময় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।