দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

শনিবার (২৪ মে) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ভৈরবা বাজারে  সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বিকাল ৫টার দিকে ভৈরবা বাজারে নিজ কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন। নেতাকর্মীসহ তিনি ভৈরবা তেল পাম্প এলাকায় পৌঁছলে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোজানুর রহমান সোজার অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ালে ভৈরবা বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাজারের দোকানি ও ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। 

আরো পড়ুন:

পদ্মার বালুমহাল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৬

আম পাড়া নিয়ে নাটোরে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গুলি 

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোজানুর রহমান বলেন, ‘‘আমার সমর্থকরা ভৈরবা বাজারে পুর্বনির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার গ্রুপের ৭/৮ জন আহত হয়।’’

পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম  ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৯ জনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আহতদের মধ্যে মোস্তফা, শরীফুল, আসাদুজ্জামান ও হাসানুজ্জামানের অবস্থা গুরুতর। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘‘আমি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ভৈরবা বাজারে আমার কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় সোজানুরের নেতৃত্বে তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।’’ 

মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান জানান, সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসার জন্য মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। 
 

ঢাকা/সোহাগ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত র রহম ন জ ব এনপ র স আহতদ র স ঘর ষ এ সময় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাংচুর করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হামলাকারীদের অভিযোগ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে চার বার ঘোরানো হয়েছে। এরপর আজ টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু আজও টাকা দেওয়া হয়নি।

সহায়তার এই টাকা পেতে পাশের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত এই ব্যক্তিরা আজ দুপুরের পর ওই অফিসের সামনে ভিড় করেন। তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর সন্ধ্যার দিকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, আজ টাকা দিতে পারবেন না। তাঁর এই কথা শুনে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। এর মধ্যে ফাউন্ডেশনে একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

ভাঙচুরের পর ওই অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, অনেকগুলো চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাসে ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।

মামুন হোসেন নামে আহতদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনের এক কর্মী তাঁদেরকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলেন, এরপরে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর চালায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আগে তো জুলাই ফাউন্ডেশন ছিল না। আমাদের আহতদের জন্য এই জুলাই ফাউন্ডেশন। আমরা আহতরা চিকিৎসার অর্থের জন্য এখানে আবেদন করি। কিন্তু এখানে আসার পর আমাদেরকে বারবার টাকা দেওয়া হবে বলে ঘুরানো হয়।’

গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান মামুন হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবত চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? আজকে সাধারণ একটা বিষয় নিয়ে পুলিশ আমাদেরকে মেরেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনে ফোন দেওয়া হয়েছে, তখন এখান থেকে কেউ যায়নি। তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?’

আহত নাজমুল হোসেন সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘সাত মাস ধরে দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য ঘুরতেছি। এখানকার ভেতরের লোকদের সাথে যাদের সম্পর্ক ভালো, তাঁদেরকে আগে টাকা দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের সাথে মামা-চাচার সম্পর্ক তাঁরাই টাকা পাচ্ছে। আমাদের যারা গুরুতর আহত, দেশে চিকিৎসা নেই, বাহিরে চিকিৎসা নিচ্ছে তাঁদেরকে সেকেন্ড টাইমের (দ্বিতীয় ধাপের) টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদেরকে টাকা দিচ্ছেন না।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষে ভাঙচুরের পর চেয়ারগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়। রাজধানীর শাহবাগে ওই অফিস কক্ষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির
  • জুলাইয়ে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা 
  • এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উমামা
  • অর্থ সহায়তা পেতে জুলাই ফাউন্ডেশনে আহতদের হট্টগোল
  • সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর আহতদের
  • মহানগর ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষ বিতরণ 
  • টাঙ্গাইলের সড়কে ঝরল ৩ প্রাণ