কুষ্টিয়ার যে বাড়ি থেকে সুব্রত বাইন আটক হয়েছে
Published: 27th, May 2025 GMT
গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে তিনতলা ভবনে অভিযান চালিয়ে নিচতলা থেকে দুজনকে নিয়ে যায় সেনা সদস্যরা। তাদের একজন সুব্রত বাইন। দেড় মাস আগে তারা এই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।
সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশংকরপুরে সোনার বাংলা মসজিদ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, মীর মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন তিনতলা ভবনের সামনে এলাকাবাসীর ভিড়। কোনো একটা বিষয় নিয়ে কানাঘুষা করছেন তারা। সাংবাদিকদের দেখে অনেকে স্থান ত্যাগ করেন। যারা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তারাও কথা বলতে রাজি হয়নি।
আরো পড়ুন:
ছাত্রী হেনস্থার প্রতিবাদ করায় ঢাবির ২ শিক্ষার্থীকে মারধর
কেএনএফের ইউনিফর্ম উদ্ধার, গার্মেন্টস মালিকসহ ৩ জন গ্রেপ্তার
সুব্রত বাইন
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দেড় মাস আগে মৃত মীর মহিউদ্দিনের বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেন। তাদের বাড়ি ভাড়া নিতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় প্রবাসফেরৎ হেলাল নামে এক যুবক। বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেয়ার পর থেকে দরজা-জানালা খুলতে দেখেননি স্থানীয়রা। দোতলায় ছাত্রাবাস। ভোরে বাড়িটির তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। এরপর দেখতে পান সেনা সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছেন। এর কিছুক্ষণ পর দুজনকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানতে পারেন, এই বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগীরা। এরপর থেকে আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকাবাসী।
দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ এ সময় তারা ওই ভবনের ভাড়াটিয়া ও আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।
সকালে ওই ভবন পুলিশের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন
এ বিষয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, ‘‘আজ আমাদের অভিযান ছিল না। হয়ত অন্য কোনো বাহিনী অভিযান করেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ তার সহযোগীকে আটকের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি, কে বা কারা কাকে আটক করেছে। তবে খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনই নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারছি না। তবে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।’’
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সুব্রত বাইনকে ধরিয়ে দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষণা করে। পুরস্কার ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন ছিলেন সুব্রত বাইন।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’