অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগ করতে চাওয়া উচিত হয়নি: মাহমুদুর রহমান মান্না
Published: 28th, May 2025 GMT
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ করতে চাওয়া উচিত হয়নি। ২০ কোটি মানুষ তাঁকে একবাক্যে সমর্থন জানিয়েছিলেন, এটা কোনো সাধারণ বিষয় নয়।
‘জনদুর্ভোগ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন’ শীর্ষক গণশক্তি সভার মতবিনিময় সভায় এ কথাগুলো বলেন মান্না।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূসকে রাজনীতি বুঝতে হবে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রাজাকে রাজনীতি জানতে হবে। তিনি মেধাবী মানুষ, চাইলেই সেটা পারবেন। কিন্তু এই মানুষ যদি করিডোর দেওয়ার কথা বলেন, সেটা হবে অবুঝ শিশুর মতো কাজ।’
সংস্কারকে চলমানপ্রক্রিয়া উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করছি। তবে জনগণের দল ক্ষমতায় এলে কাজটা সহজ হবে। “এ” দল বাদ দিয়ে “বি” দলকে বসানোর লড়াই আমরা করি না। কিন্তু মানুষ যদি “বি” দলকে ভোট দেয় সেটা আপনাকে মেনে নিতে হবে। এটাকে প্রত্যাখ্যান করলে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একজন সংসদ সদস্য তাঁর নির্বাচনী অঞ্চলে সর্বেসর্বা থাকেন। তাই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হতে হবে প্রভাবমুক্ত ও ত্রুটিমুক্ত। যেখানে মানুষ আনন্দিত হয়ে ভোট দেবেন৷
নির্বাচিত সরকারের সুবিধা উল্লেখ করে মান্না বলেন, ক্ষমতাকে এমনভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, যেখানে জনগণের বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থাকে। নির্বাচিত সরকারের কাছে সেই সুযোগ প্রত্যাশা করা যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও নদী বন্দরগুলোর দখলমুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নগণের কাছে এটাই ছিল সংস্কার। কিন্তু সরকার সেটা পারেনি। আমার মনে হয় সরকার এই সিদ্ধান্তগুলো নিতে ভয় পায়। সরকার বড় মিছিলকে ভয় পায়। আমরা দেখেছি, মিছিলের মুখে আদালতের রায় পরিবর্তন হয়েছে। ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে।’
অধ্যাপক ইউনূসের ক্ষমতার মেয়াদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অনেকে বলেন তাকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখা হোক। আচ্ছা তিনি কীভাবে থাকবেন? তিনি কি নির্বাচন ছাড়াই থাকবেন? বিনা ভোটেই থাকবেন? নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালালে এটা হিতে বিপরীত হবে। মানুষের উচিত, চোরকে ভোট না দেওয়ার জন্য প্রচারণা চালানো।
মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো.
সচিবালয়ে অস্থিরতা সৃষ্টিকে হতাশাজনক উল্লেখ করে গণমুক্তি জোটের মহাসচিব মো. আক্তার হোসেন বলেন, মানুষের দায়িত্ব যাঁরা সঠিকভাবে পালন করবেন, তাঁরাই হবেন সরকারি কর্মচারী। তাঁরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান থাকা উচিত।’
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সচিব ওমর ফারুক, নাগরিক মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী আহসান উল্লাহ, আহাদ নূর চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী আয়েশা সিদ্দিকা, শারমিন সুলতানা চৈতী, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, নারী নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য় সরক র সরক র র ক ষমত ক ইউন ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব