আমাদের সৌরজগতের বাইরে অগণিত গ্যালাক্সি রয়েছে। এসব গ্যালাক্সি কোটি কোটি নক্ষত্র, গ্যাস, ধূলিকণা ও বিভিন্ন পদার্থে পরিপূর্ণ। পৃথিবী থেকে এসব গ্যালাক্সির দূরত্ব পরিমাপ করা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ কঠিন। বিভিন্ন নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়। এদের স্পন্দনের সময়কাল তাদের প্রকৃত উজ্জ্বলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। আর তাই বিজ্ঞানীরা দূরবর্তী গ্যালাক্সিতে সেফেইড নক্ষত্র শনাক্ত করে তাদের স্পন্দনের সময়কাল পরিমাপ করেন এবং এর মাধ্যমে তাদের প্রকৃত উজ্জ্বলতা নির্ধারণ করেন। এরপর আপাত উজ্জ্বলতার সঙ্গে তুলনা করে গ্যালাক্সির দূরত্ব নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতি কয়েক কোটি আলোকবর্ষ পর্যন্ত দূরত্ব মাপা সম্ভব। এ ছাড়া টাইপ আইএ সুপারনোভা কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের গ্যালাক্সির দূরত্ব মাপার জন্য ব্যবহার করা হয়। আবার টালি-ফিশার রিলেশন পদ্ধতি সর্পিল গ্যালাক্সির দূরত্ব মাপার জন্য ব্যবহৃত হয়। সর্পিল গ্যালাক্সির ঘূর্ণন গতি তার মোট উজ্জ্বলতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া হাবলের নিয়ম ব্যবহার করে দূরবর্তী গ্যালাক্সির দূরত্ব মাপা হয়।

দূরত্ব পরিমাপের একক হিসেবে মিলিয়ন আলোকবর্ষ ব্যবহার করা হয়। এক মিলিয়ন আলোকবর্ষে আলো ১০ লাখ বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা প্রকাশ করে। আলোর গতিতে ভ্রমণ বর্তমান প্রযুক্তিতে বেশ অসম্ভব একটা কাজ বলা যায়। বিভিন্ন গ্যালাক্সির বিশাল দূরত্ব বিবেচনায় নিলে বিভিন্ন জায়গায় যেতে লাখ লাখ বছর লেগে যাবে।

অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, সেখানে আলোর গতিতে গেলেও ২৫ লাখ বছর সময় প্রয়োজন হবে। ট্রায়াঙ্গুলাম গ্যালাক্সি ৩০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আমাদের সৌরজগতের আশপাশে থাকা লার্জ ম্যাগেলানিক ক্লাউড গ্যালাক্সি ১ লাখ ৬৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, আর তাই সেখানে যেতে ১ লাখ ৬৩ হাজার বছর লাগবে। আর স্মল ম্যাগেলানিক ক্লাউড ২ লাখ ৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ফলে সেখানে যেতে ২ লাখ ৬ হাজার বছর সময় প্রয়োজন হবে।

আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির (ছায়াপথ) কেন্দ্রও প্রায় ২৬ হাজার ৫০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ফলে আলোর গতিতে ভ্রমণ করলেও সেখানে যেতে আমাদের ২৬ হাজার ৫০০ বছর সময় লাগবে। এ ছাড়া সেন্টোরাস এ গ্যালাক্সি ১ কোটি ১০ লাখ থেকে ১৬ লাখ আলোকবর্ষ, বোডেস গ্যালাক্সি ১ কোটি ১২ লাখ ১২ আলোকবর্ষ, পিনহুইল গ্যালাক্সি ২ কোটি ১০ লাখ আলোকবর্ষ, ব্ল্যাক আই গ্যালাক্সি ১ কোটি ৭ লাখ আলোকবর্ষ ও সোম্বেরো গ্যালাক্সি ২ কোটি ৯০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

সূত্র: অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ত আম দ র ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

হামফ্রে ফেলোশিপ–ডাড স্কলারশিপ–আইডিবির প্রশিক্ষণ, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই

আমেরিকা হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, জার্মান সরকারের ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ে আবেদন চলছে। তিনটির আবেদনের সুযোগ আছে আর দুদিন। আগামীকাল ৩১ জুলাই শেষ হবে হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের। আবেদনের পদ্ধতিসহ জেনে নিন এসব বৃত্তি ও ফেলোশিপের বিস্তারিত তথ্য।

১. হামফ্রে ফেলোশিপ: মাসিক ভাতাসহ ১০ মাস আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ

১০ মাসের হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতে পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন।

ফেলোশিপের সুযোগ-সুবিধা—

নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ টিউশন ফি দেওয়া হবে;

প্রয়োজন হলে প্রাক্‌-একাডেমিক ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে;

জীবনযাত্রার ব্যয় ভাতা;

এককালীন সেটলিং ভাতা;

দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাজনিত ব্যয় ভাতা;

বই কেনার খরচ;

কম্পিউটার কেনার জন্য এককালীন ভাতা;

বিমান ভ্রমণ ভাতা (প্রোগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইভেন্টে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ;

ফেলোশিপের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাদার উন্নয়ন ভাতা যেমন ফিল্ড ট্রিপ, পেশাদার পরিদর্শন ও সম্মেলন।

আরও পড়ুনএসএসসি উত্তীর্ণদের শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, মাসে আড়াই হাজার টাকা, মিলবে ২ বছর১৩ জুলাই ২০২৫আবেদনকারীর যোগ্যতা—

আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, এমন কেউ আবেদন করতে পারবেন না

পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৫ সালের আগস্টের আগে) এবং তাঁদের শিক্ষা ও কাজসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোয় আগ্রহ থাকতে হবে

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাঁদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন)।

২০২৬ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন।

২০২৬ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছরের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না।

ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোয়েফল স্কোর (ইন্টারনেটভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাঁদের টোয়েফল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাঁদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষে টোয়েফল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। (আমেরিকান সেন্টার কেবল নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোয়েফল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।)

আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি এ কথাও জানাতে হবে যে তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন, যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তাঁর নেই।

ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।

ফাইল ছবি প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ