আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল
Published: 30th, May 2025 GMT
গতকাল ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার—এই দিনটা আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল। সকাল থেকেই আবহাওয়া ছিল অস্বাভাবিক। আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা, ঠান্ডা বাতাস বইছিল। মনে হচ্ছিল, ঝড়-বৃষ্টি আসবেই। তবু আমার এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ায় আমাকে ধানমন্ডি থেকে উত্তরা যেতে হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, সকালে বের হয়ে দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসব। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ছিল তার উল্টো।
সকাল ৯টায় রওনা দিলেও গাড়ি পাইনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটা সিএনজি অটোরিকশা পেলাম। কিন্তু বের হতেই দেখি সড়কে পানি জমে আছে। রিকশা, সিএনজি, প্রাইভেট কার—সব থেমে আছে। যানজট এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ১৫ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। এর মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। প্রথমে হালকা, পরে তা মুষলধারে শুরু হয়।
আমি যখন কলাবাগান পেরিয়ে র্যাব অফিসের কাছে আসি, তখন দেখি একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে আছে জ্যামে। সাইরেন বাজছে, কিন্তু গাড়িগুলো সরতে পারছে না। এই দৃশ্য দেখে আমি কষ্ট পেয়েছি। একটি অসুস্থ মানুষ যখন অ্যাম্বুলেন্সে, তখন তার জন্য সময়ের মূল্য কতটা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বৃষ্টির পানি এতটাই জমেছে যে অনেক জায়গায় রিকশাও চলতে পারছে না। বাধ্য হয়ে সিএনজি থেকে নেমে রিকশায় উঠি। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি রিকশা আর চলতে পারছে না, তখন হাঁটা শুরু করি। ভিজে যাচ্ছি, শরীর কাঁপছে, হাতে ফোন, পকেটে ভিজে যাচ্ছে টাকা—একটা অসহায় অবস্থা।
রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে অনেক ধরনের মানুষের মুখোমুখি হয়েছি। কেউ অফিস থেকে ফিরছে, কেউ আবার ফ্লাইট ধরতে ব্যস্ত, কেউ ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য। সবাই যেন একটা যুদ্ধ করছে এই দুর্যোগের মধ্যে।
উত্তরায় যখন পৌঁছাই তখন বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা। আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে দেখি, তার অবস্থাও ভালো না। পাশে বসে তার খোঁজ নিতে নিতে মনে হচ্ছিল, এত কষ্ট করে আসাটা সার্থক হয়েছে, কিন্তু শহরের এই দুরবস্থা নিয়ে কিছু একটা করা দরকার।
আরও পড়ুনতাঁদের ট্রমা এখনো কাটেনি১ ঘণ্টা আগেএই অভিজ্ঞতা আমাকে শেখাল, আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এখনো অনেক ঘাটতি আছে। শুধু উন্নত ভবন বানালেই হয় না, বৃষ্টি হলে পানি জমে না এমন রাস্তা, সঠিক ড্রেনেজ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা—সবকিছু উন্নত করা জরুরি।
২৯ মে ২০২৫ আমার জীবনে একটা বড় শিক্ষা হয়ে থাকবে। এমন দিনে মানুষ কতটা অসহায় হয়, তা আমি নিজের চোখে দেখেছি এবং শরীর দিয়ে অনুভব করেছি।
মিরাজ
ঢাকা, বাংলাদেশ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮ম ড্যাফোডিল ক্যাপ্টেন কাপ গলফ টুর্নামেন্টে দেশি প্রযুক্তি
দেশি প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও আত্মনির্ভরতার এক অনুপ্রেরণামূলক প্রতিচ্ছবি হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের সবুজ মাঠে এবারের ‘৮ম ড্যাফোডিল ক্যাপ্টেন কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ২০২৫’ আয়োজনটি ছিল ব্যতিক্রমী। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয় বরং বন্ধুত্ব, শৃঙ্খলা ও মানসিক প্রশান্তির এক মহামিলনমেলা।
খেলাধুলা ও সুস্থ জীবনধারার প্রসারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা ড্যাফোডিল গ্রুপ এ বছরও সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল গর্বিত অংশীদার। গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর ২০২৫), সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল গ্রুপ ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট ও কেজিসি ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের গলফার, সামরিক ও বেসামরিক অতিথিবৃন্দ এবং বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন গলফ ক্লাবের প্রায় ৬৫২ জন গলফার। টুর্নামেন্ট শেষে কর্নেল মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চ্যাম্পিয়ন, কর্নেল মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম রানার আপ এবং মিসেস জিন সুক ইউন লেডিস উইনার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, মূল্য হারাতে বসেছে ১০ ডিগ্রি২৮ অক্টোবর ২০২৫এই বছরের টুর্নামেন্টে ব্যবহৃত গলফ ছাতাটি ছিল সম্পূর্ণ দেশি উদ্যোগে তৈরি, যা বাংলাদেশের ব্যবসা ও উদ্যোগের জগতে এক নতুন অধ্যায়। এটি প্রমাণ করে বাংলাদেশেও স্পোর্টসের সামগ্রী দেশিভাবে তৈরি ও রপ্তানি করা সম্ভব। এ নিয়ে মো. সবুর খান বলেন, ‘এই ধরনের সব খেলার সামগ্রী আমাদের সাধারণত বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। তবে আমরা চাইলে খেলার সামগ্রীগুলোর ক্ষেত্রে আমদানিমুখী না হয়ে নিজেদের উদ্যোক্তাদের ব্যবহার করে বাইরের দেশে উল্টো রপ্তানি বাড়াতে পারি। এই ছাতার মান হয়তো প্রথমবারেই শতভাগ আন্তর্জাতিক নয়, কিন্তু এই সামান্য ছাতাই আমাদের সাহসের প্রতীক, দেশি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
বিজ্ঞপ্তি