২৩ বছরে টানা ২৭ ফাইনাল জয়ের পর ধারাটা অবশেষে ভাঙল
Published: 30th, May 2025 GMT
পোল্যান্ডের ভ্রৎসওয়াফে পরশু রাতে উয়েফা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল বেতিসকে ৪–১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চেলসি। মার্কিন ধনকুবের টড বোয়েলি মালিকানা কেনার পর এটিই ইংলিশ ক্লাবটির প্রথম ট্রফি।
কনফারেন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নতুন ইতিহাসও গড়েছে চেলসি। পুরুষদের ফুটবলে প্রথম ক্লাব হিসেবে উয়েফার সব ক্লাব প্রতিযোগিতার শিরোপা জেতা হয়েছে গেছে তাদের।
আরও পড়ুনদুর্বৃত্তদের হুমকির এক বছর পর শৈশবের ক্লাবে ফিরলেন দি মারিয়া৬ ঘণ্টা আগেচেলসির এই অনন্য কীর্তি অবিশ্বাস্য এক রেকর্ডেরও অবসান ঘটিয়েছে। ফাইনালে রিয়াল বেতিস হেরে যাওয়ায় ২০০২ সালের পর এবারই প্রথম স্পেনের কোনো দল বড় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে ব্যর্থ হলো।
ওই সময় থেকে পরশু রাতে চেলসি–বেতিস ফাইনালের আগপর্যন্ত শীর্ষ পর্যায়ে স্পেনের দলগুলো টানা ২৭ ফাইনাল জিতেছিল। আন্তোনি–ইসকোদের দল বেতিসের ব্যর্থতার কারণে ২৮ নম্বর ফাইনালে এসে গৌরবময় এই ধারায় ছেদ পড়ল।
শুরুটা হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে দিয়ে। স্প্যানিশ ক্লাব ফুটবলের সফলতম ক্লাবটি ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে লেভারকুসেনকে হারিয়েছিল। গত বছর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেই ধারাটা অব্যাহত রেখেছিল স্পেন।
বেতিসের কারণে ফাইনালে স্প্যানিশ দলের ১০০% সাফল্যের ধারা ভাঙার আগে দেশটির কোনো দল সর্বশেষ বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে হেরেছিল ২০০১ সালে। সেটিও দুবার ঘটেছিল।
সেই বছর ইউরোপা কাপের (বর্তমানে ইউরোপা লিগ) ফাইনালে লিভারপুলের কাছে ৫–৪ গোলে হেরে যায় আলাভেস। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৪–৪ সমতায় শেষ হওয়ার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে আত্মঘাতী গোল করে বসে আলাভেস, সেটি ছিল ‘গোল্ডেন গোল’। অর্থাৎ, গোল হওয়ামাত্রই খেলা শেষ!
আরও পড়ুনঅভিশাপ-মুক্তি, অভিষেকেই শিরোপা আর পাখিদের জয়গান২৬ মে ২০২৫এর ঠিক এক সপ্তাহ পর চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় স্পেনের আরেক ক্লাব ভ্যালেন্সিয়া।
বেতিসের হারে ফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাবগুলোর আধিপত্যের ধারায় ছেদ পড়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।