চট্টগ্রামের পটিয়ায় জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে এক পক্ষের হামলায় নুরুল হক (৬০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে পটিয়া পৌরসভার মাঝেরঘাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল হক ওই এলাকার মৃত নুরুল আবছারের ছেলে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা ও সড়কসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল প্রতিবেশী চাচাতো ভাই ফজলুল হক ও সিরাজুল হকের পরিবারের সঙ্গে। আজ দুপুর ১২টার দিকে নুরুল হক ওই বিষয়ে প্রতিপক্ষের কাছে জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন নুরুল হকের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

পরিবারের লোকজন তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়া সুলতানা বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তির কপালে গভীর রক্তাক্ত জখম ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

নিহত ব্যক্তির মেয়ে হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘প্রতিপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জায়গা জোর করে দখলে রেখেছে। আজ জুমার নামাজে যাওয়ার সময় আমার বাবা বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। খবর পেয়ে আমি ও আমার দুই ভাই কামাল উদ্দিন (৩৪) ও জামাল উদ্দিন (৩৮), দাদি জুলেখা বেগমসহ আরও কয়েকজন ঘটনাস্থলে গেলে আমাদেরও মারধর করা হয়।’

পটিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিক উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, জায়গাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নুরুল হককে লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

শফিক উল্লাহ আরও বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল হ র রড ন র ল হক

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।

আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ