শেরপুরে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে এক কৃষক ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) নকলা উপজেলার টালকি ইউনিয়নে এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নে তারা মারা যান।

মারা যাওয়ারা হলেন- নকলা উপজেলার টালকি ইউনিয়নের পশ্চিম বড়পাগলা গ্রামের সমির উদ্দিন (সমু) এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মানিককুড়া গ্রামের হাজেরা বেগম (৪৫)।

এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টির মধ্যেই টালকি ইউনিয়নের পশ্চিম বড়পাগলা গ্রামের সামির উদ্দিন দুপুরে মাঠে গরু আনতে যান। এসময় বজ্রপাত হলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

ঘুমন্ত সোহাগীর নিষ্প্রাণ দেহ মিলল বড়াল নদের পাড়ে

জোড়া মাথার দুই কন্যাশিশুর জন্মের আগেই মৃত্যু

টালকি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন বদ্দি বলেন, ‍“আমার প্রতিবেশী সামির উদ্দিন বাড়ির পাশের মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন। তার জানাজার প্রস্তুতি চলছে।”

নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, “খুব কাছেই বজ্রপাত হওয়ায় তিনি শব্দে ভয় পান। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।” 

অপরদিকে, নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মানিককুড়া গ্রামে নাতনিকে মাদরাসা থেকে আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান হাজেরা বেগম। তিনি খোরশেদ আলমের স্ত্রী। দুপুর দেড়টার দিকে মারা যান তিনি। 

এলাকাবাসী জানান, আজ দুপুরে নাতনিকে আনতে মাদরাসায় যান হাজেরা বেগম। বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। নালিতাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নালিতাবাড়ি থানার ওসি সুহেল রানা বলেন, “এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ