প্যারিসে স্বপ্ন এবার সত্যি হয়েছে। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে বহুদিনের আকাঙ্ক্ষিত সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি অবশেষে উঠল পিএসজির হাতে। তবে কেবল জেতাই নয়, এই জয়ে প্যারিসিয়ানরা খুলেছে নজিরবিহীন এক রেকর্ডের ঝাঁপি। ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে যেন ফুটবল ইতিহাসের পাতায় নিজেদের অস্তিত্ব চিরকালের জন্য ছাপিয়ে দিল লুইস এনরিকের দল।

এক নজরে দেখা যাক, ঐতিহাসিক এই জয়ের সঙ্গে পিএসজি যেসব নজির সৃষ্টি করল—

দীর্ঘ পথ পেরিয়ে প্রথম স্বাদ:
চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপিয়ান কাপে মিলিয়ে পিএসজি খেলেছে ১৬৮টি ম্যাচ। তবে এবারই প্রথম তারা শিরোপা ছুঁয়ে দেখল। এত ম্যাচ খেলে প্রথমবারের মতো কাপ জয়ের রেকর্ড এটাই।

আরো পড়ুন:

সেঞ্চুরি ছাড়াই চারশো! ব্যাটে-বলে এক অন্যরকম দিন ইংল্যান্ডের

‘বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত প্রাণী’র অনন্য অর্জন

টিনএজারদের বাজিমাত:
ফাইনালে গোল করেছেন দুই কিশোর মাইয়ুলু ও দেজিরে দুয়ে। ১৯ বছর বয়সী দুই তরুণ একসঙ্গে গোল করে দেখিয়ে দিয়েছেন ভবিষ্যতের পিএসজি কতটা উজ্জ্বল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।

ট্রেবল জয়ের ইতিহাস:
লিগ, কাপ এবং ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ— তিন শিরোপা ঘরে তুলে ট্রেবল পূর্ণ করল পিএসজি। ফ্রান্সের ইতিহাসে এমন অর্জন এই প্রথম।

লুইস এনরিক ট্রেবল গুরু:
২০১৫ সালে বার্সেলোনাকে নিয়ে একই কীর্তি গড়া লুইস এনরিক এবার পিএসজির হয়েও ট্রেবল জয় করলেন। পেপ গার্দিওলার পর তিনিই দ্বিতীয় কোচ যিনি দুই ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জিতলেন।

ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়:
৫-০ গোলের জয় দিয়ে পিএসজি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়ধারী দল হয়ে উঠেছে।

তরুণ দুয়েরের তাণ্ডব:
ম্যাচের প্রথম তিনটি গোলেই ছিলেন দেজিরে দুয়ে। দুটি গোল নিজে করে এবং একটি অ্যাসিস্ট করে ইতিহাস গড়েছেন ম্যাচের নায়ক হয়ে।

ইন্টারের জন্য তিক্ত রেকর্ড:
ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে এত বড় ব্যবধানে হার ইন্টার মিলান আগে কখনও দেখেনি। ১৯৬২ সালের পর এবারই প্রথম কোনো দল ফাইনালে পাঁচটি গোল খেল।

অভিজ্ঞতা কি ব্যাকফায়ার করল?
ইন্টারের শুরুর একাদশে ছিলেন তিনজন বয়সে ৩৫ পার করা ফুটবলার- সোমার, অ্যাকারবি ও মিখিতারিয়ান। এই অভিজ্ঞ স্কোয়াডও থামাতে পারেনি পিএসজির তরঙ্গ।

সর্বকনিষ্ঠ অ্যাসিস্ট মাস্টার:
১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে ফাইনালে অ্যাসিস্ট করে দেজিরে দুয়ে হয়ে গেলেন সবচেয়ে কম বয়সী অ্যাসিস্টকারী। এতদিন এই রেকর্ড ছিল জুড বেলিংহামের।

হাকিমির জোড়া গৌরব:
চারটি গোল ও পাঁচটি অ্যাসিস্ট মিলিয়ে হাকিমি এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে ডিফেন্ডার হিসেবে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলে অবদান রাখা খেলোয়াড়। তার সঙ্গে যোগ হলো আরেকটি ঐতিহাসিক কীর্তি, ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে নিজের সাবেক ক্লাব ইন্টার মিলানকে গোল দিয়ে ব্যথা দেওয়ার নজিরও গড়েছেন তিনি।

এই এক ফাইনালে পিএসজি যে শুধু শিরোপা জিতল তা নয়, তারা নতুন ইতিহাস লিখেছে ফুটবল মহাকাব্যে। একের পর এক রেকর্ড আর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বোঝা যাচ্ছে ইউরোপের রাজা এখন প্যারিসেই বসবাস করেন।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ড ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ প এসজ র ইউর প য় ইন ট র ট র বল র কর ড ফ ইন ল ফ টবল প রথম সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ