সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আজ সোমবার দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের কাছে স্মারকলিপি দেবে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। একই দাবিতে গতকাল রোববার তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এর পর মিছিল নিয়ে তারা খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের কাছে স্মারকলিপি দেন। পরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা। 

কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, এ অধ্যাদেশের কিছু বিধানের অপপ্রয়োগের শঙ্কা রয়েছে। কয়েকজন উপদেষ্টার নজরে এই জিনিসটি এনেছি। প্রধান উপদেষ্টার কাছেও বিষয়টি তুলে ধরব। তবে অধ্যাদেশটি রেখে কী কী সেফগার্ড করলে কর্মচারীর কাছেও এটা গ্রহণযোগ্য হবে, তাও ভেবে দেখা দরকার।

উপস্থিত কর্মচারী নেতারা বলেন, এই অধ্যাদেশ সংবিধানবিরোধী কালো আইন। অবিলম্বে এটা বাতিল চাই। এ সময় বক্তব্য দেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ও কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস গত শনিবার জাপান সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। এখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবেন। কর্মচারী নেতারা বলছেন, এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে একটা আশাব্যঞ্জক খবর পাবেন।

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এরপর থেকে এই অধ্যাদেশটিকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালো আইন’ আখ্যায়িত করে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে সন্ধ্যায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সরকার। এ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা চার দিন বিক্ষোভের পর সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করায় কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনেন তারা। গত বুধবার কর্মসূচি এক দিনের জন্য স্থগিত করে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন কর্মচারীরা।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ সম ব শ কর মকর ত উপদ ষ ট র ক ছ ন উপদ ষ ট র স ম রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্য বছরের তুলনায় কম হতে পারে

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। 

আজ সোমবার বিকেল ৩টায় তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাজেট পেশ করেন। বাজেট প্রস্তাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। 

তিনি বলেন, আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।

বাজারভিত্তিক মুদ্রাবিনিময় হার চালুর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি। তবে এটি নিশ্চিত করতে হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রাবিনিময় হার চালু করেছি।

এবারের বাজেট কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধি-কেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে। মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, জীবিকার নিরাপত্তা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশ—এ অত্যাবশ্যক উপাদানগুলো ছাড়া যে কোন রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়ে, দুর্বল হয় সমাজের ভিত। এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যে সকল সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যে সকল চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এটি দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। প্রতিবছর জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হলেও এবার সংসদ না থাকায় তা ঘোষণা করা হচ্ছে বেতার-টেলিভিশনের মাধ্যমে। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম। 

এর আগে আজ দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  • অধ্যাদেশের কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে: আইন উপদেষ্টা
  • বাজেটে জন-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি: নাহিদ
  • এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ড গঠন করল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
  • ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত
  • ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত 
  • ‘এমন কর্মসূচি দেব, কল্পনা করতে পারবেন না’
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৩ জুন ২০২৫)
  • ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে ওটিটির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে
  • জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্য বছরের তুলনায় কম হতে পারে