অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক আখ্যায়িত করে এই বাজেট জনগণের ওপর করের বোঝা আরো বাড়াবে। প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (২ জুন) খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ঋণনির্ভর এ বিশাল ঘাটতি বাজেটে জনগণের অর্থনৈতিক বৈষম্য তেমন কমছে না। এমনকি এই বাজেটে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা হয়নি।
খেলাফত মজলিস নেতারা বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থপাচার, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে রেখে গেছে। বাজেটে এ বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে টেনে তোলার আরো ব্যবস্থা থাকার দরকার ছিল। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙা করতে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ, দুর্নীতির সব পথ বন্ধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা বরাদ্দ
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ
সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বাজেট–ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দিলেও রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, এতে জনগণের ওপর করের বোঝা আরো বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা করা দরকার ছিল। ই–কমার্স পণ্য বিক্রয় কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় অনলাইন কেনাকাটায় খরচ বেড়ে যাবে। বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলেও উন্নয়ন কর্মসূচি হ্রাস পাবে। দীর্ঘমেয়াদি ও মেগা প্রকল্প নতুনভাবে অনুমোদন পাবে না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
তারা বলেন, প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশাল অঙ্কের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণে দেশি-বিদেশি ঋণ ও সুদের বোঝা আরো বাড়াবে। তবে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ রাখতে পারলে তা হবে বাজেটের বড় চমক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর দ দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব