নেইমারকে ‘সেদ্ধ’ করলে যা থাকে, সেটাই দেজিরে দুয়ে
Published: 3rd, June 2025 GMT
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শেষ বাঁশি বেজেছে। পিএসজির খেলোয়াড়েরা মাঠেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের উদ্যাপনে মত্ত। সেই ভিড়ে এগিয়ে গেলেন মার্সেলো—রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিলের সাবেক লেফটব্যাক। দেজিরে দুয়ে তাঁকে আগেই খেয়াল করেছিলেন। দুই পা এগিয়ে গিয়ে মার্সেলোকে বললেন, ‘আমার পক্ষ থেকে নেইমারকে দয়া করে হ্যালো বলবেন, প্লিজ। তিনি আমার আদর্শ।’
মার্সেলো অবশ্য এই কাজটি আগেই সেরে রেখেছেন। দুয়েকে মাঠেই জানিয়ে দেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোমাকে অনুসরণ করতে তাকে (নেইমার) আগেই বলেছি। বার্তাও দিতে বলেছি।’
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস লিগে নিয়ম পরিবর্তন, লিগ পর্বে ভালো করলে নকআউট পর্বে ‘বাড়তি সুবিধা’১৩ ঘণ্টা আগেপিএসজি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার পর নেইমার দুয়েকে কোনো বার্তা দিয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি। তবে নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, খেলার ধরনে তাঁর সঙ্গে একদম অমিল যেমন নেই, তেমনি গোল করে উদ্যাপনও ব্রাজিলিয়ানের অনুকরণেই। যদিও দুয়ের খেলার ধরনে তুলনাটা কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গেই বেশি ওঠে। টগবগে আত্মবিশ্বাস, বিস্ফোরক দৌড় ও চটপট সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। যদিও দুয়ের ভাবনা অন্যরকম, ‘আমি দেজিরে দুয়ে, কিলিয়ান হলো কিলিয়ান।’
অর্থাৎ দুয়ে নিজের পরিচয়েই পরিচিত হতে চান। তবে প্রভাবটাও স্বীকারও করে নিলেন, ‘সবাই কোনো না কোনো খেলোয়াড়ের মাধ্যমে প্রভাবিত। আমার ক্ষেত্রে নেইমার।’
পিএসজিতে সতীর্থ ছিলেন নেইমার ও এমবাপ্পে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ক্রেতা
রংপুরের জিপিআই পণ্য ‘হাঁড়িভাঙা’ আম। দেশজুড়ে এর সুখ্যাতি। প্রতি বছর জুনের মাঝামাঝি বাজারে আসে হাঁড়িভাঙা। তখনই সম্পূর্ণ পরিপক্ব হয়। এবার নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা। কৃত্রিমভাবে এসব আম পাকিয়ে বাজারজাত করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন ক্রেতারা।
হাঁড়িভাঙা আমের উৎপাদন এলাকা মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ও ময়েনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাত করা হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ক্যারেটে ভরা হচ্ছে। পরে সেগুলো ট্রাকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
গত মঙ্গলবার রাতে ময়েনপুর ইউনিয়নের কদমতলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমাণ হাঁড়িভাঙা আম স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশেই সড়কে দাঁড়ানো একটি ট্রাক। ক্যারেটে ভরা হচ্ছে আম। সেগুলো ট্রাকে লোড করা হচ্ছে। দেখা গেল একটি প্লাস্টিকের বোতলে পানি সদৃশ্য কিছু আমের ওপর স্প্রে করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানালেন, হাঁড়িভাঙা আমে এখনও পরিপক্বতা আসেনি। তাই ফরমালিন স্প্রে করা হচ্ছে।
কদমতলা বাজারে যেখানে আম ট্রাকে লোড করা হচ্ছে, তার আশপাশে অনেক মানুষের জটলা। স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, এখনও আম পরিপক্ব হয়নি। তার পরও অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় বাগান থেকে আম পেড়ে বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন।
শফিউল ইসলাম নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, আম পাকাতে বিষ (ফরমালিন) মেশানো হচ্ছে। এটা একটা ভয়ংকর ব্যাপার।
পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্য, বাগানে আম পুরাট (পরিপক্ব) হয়েছে। বাগান মালিকরা তাঁকে ডেকে আম বিক্রির কথা বলেন। তাই তাদের কাছ থেকে তিনি আম কিনছেন।
শুধু কদমতলা বাজারই নয়, হাঁড়িভাঙা আমের প্রধান উৎপাদন এলাকা খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ বাজার, পাইকাড়ের হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সর্বত্রই আম বিক্রি করার ধুম চলছে।
স্থানীয় বাগান মালিক আবু তাহের জানান, কিছু কিছু গাছে আম পাকা শুরু হয়েছে। তবে পাইকারিভাবে (গণহারে) আম পাড়া ঠিক হচ্ছে না। তিনি এখনও আম পাড়া শুরু করেননি। অনেকে টাকার লোভে অপরিপক্ব আম পেড়ে বিক্রি করছে, এটা ঠিক নয়। এতে হাঁড়িভাঙার সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন বলেন, প্রশাসন থেকে এখনও হাঁড়িভাঙা আম গাছ থেকে সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ হয়নি। তবে প্রতি বছর জুনের ১৫ থেকে ২০ তারিখে আম পাড়া হয়। এর আগে আম পাড়া ও বিক্রি করা অন্যায়। কোথাও আগে হাঁড়িভাঙা আম পাড়া হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ সমকালকে বলেন, অপরিপক্ব আম পাড়া ও ফরমালিন মেশানোর ব্যাপারে কোনো অভিযোগ কেউ দেয়নি। কোথাও এটা করে থাকলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।