জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সংস্কার কার্যক্রমে বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব মতামত দিয়েছে, সে আলোকে পরিবর্তিত প্রস্তাব নিয়েই জাতীয় সনদ (জুলাই সনদ) করা হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার ছিল দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার উদ্বোধনী। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী মাসে জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।

আজকের বৈঠকে সংবিধানের সত্তর অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধির একটি অংশ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

সংস্কার কার্যক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক যুক্তি সামনাসামনি আলোচনা হলে অনেক ক্ষেত্রে অবস্থানগত পরিবর্তন হতে পারে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সময়ের স্বল্পতা রয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কী কাজ করছে, তা জানতে জনমনে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছি, যাতে মানুষ আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বুঝতে পারে।’

যেসব প্রস্তাবে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জুলাই সনদে যুক্ত হবে না বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘সব বিষয়ে আমরা একমত হব না। কিছু জায়গায় একমত হব। বাকিটা রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। জনগণ কতটা গ্রহণ করবে, সেটা তাদের বিষয়।’

আগামী মাসের মধ্যে জুলাই সনদ তৈরির কাজ সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করেন আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, সংস্কার সুপারিশে আমরা যেন ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি।’

আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে ত্রিশটি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে রয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), গণ-অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, আমজনতার দল, ভাসানী অনুসারী পরিষদ/ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিশনের সদস্য মো.

আয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক ও ইফতেখারুজ্জামান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ ভাগ সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে চায় জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিগুলোর সভাপতি কে হবে, তা সরকার এবং বিরোধী দল সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। তবে কমপক্ষে ৫০ ভাগ কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে হতে হবে।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলগুলো আলাদা ব্রিফিং করে।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা মতামত দিয়েছি, ৭০ অনুচ্ছেদে অর্থবিল, নো-কনফিডেন্স (আস্থা ভোট) এবং সংবিধান পরিবর্তন— এই তিনটি বিষয় ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা চাইলে তার দলের বিরুদ্ধে মতামত দিতে পারবেন।’

জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, বৈঠকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে বলেছি, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বাইরে কিছু ‘অ্যাপেক্স কমিটি’ আছে। সরকারি হিসাব, সরকারি প্রতিষ্ঠান, অনুমিত হিসাব ও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কমিটি— এগুলোর প্রধান বিরোধী দল থেকে দিতে হবে।

এর আগে সকালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্নকক্ষে নারী আসনসহ সংস্কার কমিশনগুলোর আরও কিছু সুপারিশ নিয়ে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করেছে সোমবার। সেদিন আলোচনার উদ্বোধন করেন কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপিসহ দেশের ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগের ‘ঘাঁটি’ কিশোরগঞ্জে সব নেতা আত্মগোপনে, চাঙা বিএনপি–জামায়াত
  • ৫০ ভাগ সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে চায় জামায়াত
  • ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন প্রশ্নে কাছাকাছি অবস্থানে দলগুলো
  • কারাবন্দী ফারুক খান একা চলাফেরা করতে পারেন না
  • চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান চৌধুরী, সম্পাদক সারোয়ার হোসেন
  • ন্যূনতম ঐকমত্যের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে সনদ করতে চাই: আলী রীয়াজ
  • নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার একটি কারণও নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • নির্বাচন কোনোভাবেই ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কারণ নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ