ফারুকের মনোনয়ন বাতিল ও আমিনুলকে মনোনয়ন কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
Published: 3rd, June 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পরিচালক হিসেবে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল এবং আমিনুল ইসলামকে পরিচালক মনোনীত করার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে সভাপতি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে বলে বিসিবির আইনজীবী জানিয়েছেন।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক মনোনীত করার বৈধতা নিয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। বিসিবির সদ্য সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ ওই রিট করেন।
এর আগে গত ২৯ মে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে। পরদিন ৩০ মে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুলকে বিসিবির পরিচালক মনোনীত করে এনএসসি। এই দুই সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া সচিব এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিলের পর এক বোর্ড সভায় আমিনুল ইসলামকে বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত করেন পরিচালকেরা।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গত ২৯ মে এবং ৩০ মের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার রিটটি করেন ফারুক আহমেদ। রিটটি গতকাল সোমবার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। অন্য কোনো বেঞ্চে রিটটি উপস্থাপন করার স্বাধীনতা রিট আবেদনকারীর থাকবে বলে উল্লেখ করেন আদালত। এরপর এই বেঞ্চে রিটটি দাখিল করা হয়, যা আজ শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ২৫ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে ফারুকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, আদালত রুল ও স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। যারা আছেন তারা থাকবেন। আদালতের বক্তব্য হচ্ছে, যে যেভাবে আছেন, সে সেভাবে থাকবেন। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। তার মানে যে যে অবস্থায় আছেন, সে অবস্থায় ফাংশন করবেন।
বিসিবির আইনজীবী মাহিন এম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজকে যারা পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে আছেন ও কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারাই কাজ চালিয়ে যাবেন। আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমানে নয় সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম ন ল ইসল ম ফ র ক আহম দ স থ ত বস থ নয়ন ব ত ল আইনজ ব র পর চ
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।